আরামবাগের চাঁদুর বনাঞ্চলে চড়ুইভাতি নয়, মাইকিং প্রচারে জোর।
সংরক্ষিত অরণ্য (রিজ়ার্ভ ফরেস্ট) বলে চিহ্নিত থাকলেও দীর্ঘ দিন বিনা অনুমতিতে বছরভর পিকনিক চলেছে আরামবাগের চাঁদুর জঙ্গলে। চলতি শীতের মরসুম থেকে হুগলির একমাত্র ওই বনভূমির চাঁদুর বিভাগে (বিট) পিকনিক সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়েছে। সেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে শনিবার থেকে ব্যাপক মাইক প্রচার শুরু করেছেন বন দফতরের চাঁদুর রেঞ্জ কর্তৃপক্ষ।
জঙ্গলের পরিবেশ রক্ষা এবং জীববৈচিত্রের নিরাপত্তায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে চাঁদুরের রেঞ্জ অফিসার আসরাফুল ইসলাম বলেন, “জঙ্গলের সংরক্ষিত অংশ (চাঁদুর বিট) রক্ষায় গত বছর থেকেই জোর দেওয়া হয়েছে। গত বছর পরিবেশ সংক্রান্ত কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে পিকনিকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তারপরেও কিছু অনিয়মের অভিযোগ ছিল। এ বার পিকনিক সম্পূর্ণ বন্ধ।” তবে, ওই বনভূমির অন্য চারটি সুরক্ষিত অংশে (বিট) শর্তসাপেক্ষে পিকনিকের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
বন দফতর জানিয়েছে, ওই চারটি (পারআদ্রা, বাবলা, ভাদুর ও রাঙামাটি) বিটে পিকনিক করতে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। যে সব শর্ত আরোপ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে— পশুপাখির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিজে বা মাইক বাজানো যাবে না। থালা-গ্লাস ইত্যাদি কোনও প্লাস্টিকের সরঞ্জাম আনা যাবে না। মদ্যপান নিষিদ্ধ। নিজেদের বর্জ্যের ব্যাগ এনে সব তুলে নিয়ে যেতে হবে ইত্যাদি। নিয়ম না মানলে আইনানুগ কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলেওপ্রচার চলছে।
দ্বারকেশ্বর নদের দু’পাড় জুড়ে আরামবাগ, গোঘাট এবং সংলগ্ন পূর্ব বর্ধমান জেলার কিছুটা অংশ নিয়ে প্রায় ৬৪০ একর এলাকা নিয়ে জঙ্গলভূমির মোট পাঁচটি খণ্ড (বিট)। আরামবাগের দিকে ‘চাঁদুর’ ছাড়া আছে ‘পারআদ্রা’ এবং পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহি থানার ‘বাবলা’। আর দ্বারকেশ্বর নদের পশ্চিম দিক গোঘাটের ‘ভাদুর’ ও ‘রাঙামাটি’। চাঁদুর ছাড়া বাকি চারটি বিটে সেগুন, শিশু, শাল, শিরীষ ইত্যাদি গাছপালা আছে। সেখানে হনুমান, শেয়াল, সাপ, গোসাপ, নেউল ইত্যাদি বন্যজন্তু এবং নানা পাখির বাস।