জিটি রোডে এ ভাবেই টোটোর লাইন লেগে থাকে। নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উষ্মা প্রকাশ করার পরে পথচারীদের এবং গাড়ি চলাচলের সুবিধার জন্য রাস্তায় দখলদার তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে হুগলির বিভিন্ন শহরেও। এ বার পান্ডুয়ায় জিটি রোডে যানজট মোকাবিলা নিয়েও অবৈধ দখলদারির প্রশ্ন উঠল প্রশাসনিক বৈঠকে। প্রশাসন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার পান্ডুয়া থানায় ওই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, নিয়মের তোয়াক্কা না করে রাস্তার উপরে অটো-টোটো বা মোটরবাইক, সাইকেল, গাড়ি রাখলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই পুলিশ এ নিয়ে পদক্ষেপ শুরু করবে।
বিডিও (পান্ডুয়া) সেবন্তী বিশ্বাস জানান, যাঁরা বেআইনি ভাবে রাস্তা দখল করে ব্যবসা করছেন, আগামী শনিবার অভিযান চালিয়ে তাঁদের পান্ডুয়া নিয়ন্ত্রিত বাজার বা অন্যত্র ফাঁকা জায়গায় সরে যাওয়ার জন্য আবেদন করা হবে। এ ব্যাপারে মাইকে প্রচার করা হবে। রাস্তায় যত্রতত্র টোটো-অটো দাঁড় করিয়ে যাত্রী তোলা-নামানো যাবে না।
পান্ডুয়ায় জিটি রোডে যানজটের জেরে দুর্ভোগ নতুন নয়। এর আগে প্রশাসনের বহু আশ্বাসেও সমস্যা মেটেনি। প্রশাসনের পর্যবেক্ষণ, মাত্রাতিরিক্ত অটো-টোটো এবং যত্রতত্র তাদের স্ট্যান্ড যেমন জিটি রোডে যানজটের কারণ, তেমনই বিশেষত জয়পুর রোড থেকে কলবাজার পর্যন্ত রাস্তার একাংশ কার্যত দখল করে ব্যবসার জন্য এই সড়ক সঙ্কীর্ণ হয়েছে। ফলে, গাড়ি চলাচলের পরিসর কমেছে। বেড়েছে সমস্যা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, হাসপাতাল রোডে চলা দায়। পাঁচ মিনিটের রাস্তা যেতে চার গুণ সময় লাগে। স্টেশন থেকে তেলিপাড়া যেতেও তাই। তেলিপাড়া মোড়, কালনা মোড়ে যানজট নিত্যদিনের চিত্র। বেপরোয়া টোটোর দাপটে ছোটখাটো দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খায় ট্র্যাফিক পুলিশ।
জানা গিয়েছে, পান্ডুয়া পঞ্চায়েত এলাকায় দু’আড়াই হাজার টোটো-অটো চলে। প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সোমনাথ তালুকদার বলেন, ‘‘ফুটপাত দখল করে ব্যবসার জন্য দিন দিন জিটি রোড সরু হচ্ছে। এরপর টোটো-টোটো রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলের উপায় থাকছে না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।’’
পান্ডুয়ার টোটো সংগঠনের সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূল নেতা সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘বেকার সমস্যার কারণে বহু যুবকের রোজগারের উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে টোটো। টোটো রাখার নির্দিষ্ট কোনও স্ট্যান্ড না থাকায় একটু সমস্যা হচ্ছে। টোটো ও অটো চালকদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। বেপরোয়া ভাবে তাঁরা যাতে গাড়ি না চালান এবং যেখানে-সেখানে গাড়ি দাঁড় না করান, তা বলা হবে।’’
মঙ্গলবার বৈঠকে ছিলেন যুগ্ম বিডিও (পান্ডুয়া) রজতকান্তি বিশ্বাস, ডিএসপি (ক্রাইম) অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র, সিআই (মগরা) ও পান্ডুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সৌমেন বিশ্বাস, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ময়না মাঝি প্রমুখ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও টোটো-অটো সংগঠনের কর্মকর্তারাও ছিলেন।