রিয়া কুমারীর খুনে উঠে এল ‘অনার কিলিং’ তত্ত্ব। —ফাইল চিত্র।
ঝাড়খণ্ডের অভিনেত্রী রিয়া কুমারীর মৃত্যুর কারণ হিসাবে উঠে এল নতুন অভিযোগ। শুক্রবার আদালতে রিয়ার শ্বশুর এই খুনের জন্য সরাসরি দায়ী করলেন বৌমার ভাই অজয় রানাকে। তাঁর অভিযোগ, বৌমার বাপের বাড়ির লোকজন ‘উঁচু জাতের’। তাই তাঁদের ছেলের সঙ্গে রিয়ার সম্পর্ক মেনে নেয়নি বৌমার পরিবার। এ নিয়ে তাঁর ছেলে প্রকাশ কুমারকে হুমকি দেওয়া হত।
গাড়িতে কলকাতায় আসার পথে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা রিয়া কুমারীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন সন্দীপ কুমার। সম্পর্কে তিনি প্রকাশের ভাই। আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে প্রকাশকে। শুক্রবার উলুবেড়িয়া আদালতে প্রকাশের বাবা ধানেশ্বর রাম দাবি করেন তাঁর ছেলে নির্দোষ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নিচু জাতের এবং রিয়ারা উঁচু জাতের। তাই রিয়ার ভাই অজয় আমার ছেলে প্রকাশের সঙ্গে বোনের মেলামেশা পছন্দ করতেন না। তারা যে একসঙ্গে ভিডিয়ো তৈরির (ইউটিউবে ভিডিয়ো) কাজ করে সেটাও অপছন্দ করতেন।’’ প্রকাশের বাবার দাবি, জাতের সমস্যার কারণে অজয় তাঁদের হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, যদি রিয়া এবং প্রকাশের বিচ্ছেদ না হয়, তবে যে কোনও এক জনকে পৃথিবী থেকে তিনি সরিয়ে দেবেন। তাই নিজের বোনকে তিনি খুন করেন বলে অভিযোগ। অর্থাৎ, প্রকাশের বাবা তুলে এনেছেন সম্মান রক্ষায় খুনের (অনার কিলিং) তত্ত্ব।
প্রকাশের বাবার আরও দাবি, তিনি অজয় রানার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করবেন। অন্য দিকে, বাগনান থানা সূত্রে খবর, অভিনেত্রীর খুনের ঘটনায় তাঁর দেওরকে গ্রেফতারের আদালতে তোলা হয়। আদালতে সন্দীপও দাবি করেন যে, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি দাবি করেন, অজয় তাঁকে ফোন করে সাহায্য চান। তাঁকে বাগনানে ডাকেন। তার পরই পুলিশ তাঁকে পাকড়াও করেছে। তবে দু’পক্ষের সওয়াল জবাবের পর উলুবেড়িয়া আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ধৃতদের ১১ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার সকালে বাগনানের চন্দ্রপুরের কাছে মুম্বই রোডে দুষ্কৃতীদের গুলিতে রিয়া খুন হন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন তাঁর স্বামী প্রকাশ। তাঁর দাবি, ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় গাড়িতে বসে থাকা স্ত্রীর উপর গুলি চালানো হয়। কিন্তু ওই রাতেই রিয়ার দাদা অজয় রানা বাগনান থানায় এসে প্রকাশের বিরুদ্ধেই এফআইআর করেন। তার ভিত্তিতেই পুলিশ প্রকাশকে গ্রেফতার করে। প্রকাশ ছাড়াও তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী সারদা বেদি এবং দুই ভাইয়ের নাম এফআইআরে রয়েছে বলে খবর তদন্তকারীদের সূত্রে।