অঙ্কিতা দাস চক্রবর্তী।
সরস্বতী পুজোর রাতে শ্বশুরবাড়িতে ফেরার পথে বেপরোয়া লরিতে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল মোটরবাইক আরোহী এক তরুণীর। বুধবার এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে বালি ও বেলুড়ের মাঝে হিন্ডালকো কারখানার সামনে। মৃতার নাম অঙ্কিতা দাস চক্রবর্তী (২০)। তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে মোটরবাইকে বালির বাড়ি থেকে সালকিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে ফিরছিলেন।
অঙ্কিতার স্বামী অভিজিৎ দাস জানান, লরিটি পিছন থেকে তাঁর বাইকে ধাক্কা মারে। তিনি রাস্তার বাঁ দিকে ছিটকে পড়েন, তাঁর স্ত্রী ডান দিকে। মুহূর্তের মধ্যে লরির পিছনের চাকা অঙ্কিতাকে পিষে দেয়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাত ৯টার পরে জিটি রোডে ট্রাক-লরির ‘নো এন্ট্রি’ খোলে। তার পরেই শয়ে শয়ে ট্রাক ও লরি বেপরোয়া গতিতে চলাচল শুরু করে। পুলিশকে বার বার অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।
ওই দম্পতির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলুড় স্টেশন রোডের বাসিন্দা অঙ্কিতার সঙ্গে বছর দেড়েক আগে বিয়ে হয়েছিল সালকিয়ার মহীনাথ পোড়েল লেনের বাসিন্দা অভিজিতের। ঘটনার দিন তাঁরা সালকিয়ার বাড়ি থেকে সরস্বতী পুজো উপলক্ষে বালিতে মেলায় গিয়েছিলেন। মৃতার খুড়োশ্বশুর মানিক দাস বলেন, ‘‘দু’জনে দুপুরে আমার বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করে বালি যায়। মাত্র দেড় বছর আগে ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছিল ওদের। এমন ঘটনা ভাবা যাচ্ছে না।’’
মানিকের অভিযোগ, রাত ৯টার পরে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে বালি ও বেলুড় থানা এলাকার জিটি রোডে যানজট শুরু হয়। তা চলে ১০টা, কখনও ১১টা পর্যন্ত। এর পরে রাস্তা ফাঁকা পেলেই লরিচালকেরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান। অভিযোগ, ট্র্যাফিক পুলিশের নজরদারির অভাবে লরি বা ট্রাকের ধাক্কায় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে হাওড়া পুলিশ মর্গে অঙ্কিতার দেহ নিতে এসেছিলেন পরিজনেরা। সেখানে দাঁড়িয়ে মৃতার কাকা দীপঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাতে আমার বাড়ি থেকে দু’জনে খেয়েদেয়ে বেরোনোর মিনিট দশেকের মধ্যে অভিজিৎ ফোন করে জানায়, অঙ্কিতাকে একটি লরি পিষে দিয়েছে। আমরা গিয়ে দেখি, অঙ্কিতার দেহের পাশে হতভম্ব হয়ে বসে আছে অভিজিৎ। ঘটনার পর থেকে ও অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, লরিটি আটক করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে চালককে। পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘রাতে জিটি রোডে পর্যাপ্ত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী থাকেন। তবে, ওই রাস্তায় যানজটের কারণ খতিয়ে দেখা হবে। সেই সঙ্গে সেখানে পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’