Protest

আগেও উদ্বোধনের পরে রাস্তা হয়নি, এ বার শুরুতেই বিক্ষোভ

রাস্তার কাজের উদ্বোধনের জন্য এ দিন মঞ্চ তৈরি হয়েছিল নুরুল্লাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রচার হয়েছিল কাজের সূচনা করতে আসবেন উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল মাজি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া-চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৩ ০৬:০৫
Share:

প্রকল্পের উদ্বোধনে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ। মঙ্গলবার বাণীবনে। ছবি: সুব্রত জানা।

তিন বছর আগে রাস্তা তৈরির জন্য বোর্ড লাগানো হয়েছিল। ঘটা করে নারকেল ফাটিয়ে রাস্তার কাজের সূচনাটুকুই হয়েছিল। কিন্তু উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের বাণীবন পঞ্চায়েতের নুরুল্লপাড়া গ্রামের উত্তরপাড়া থেকে সাঁতরাপাড়া পর্যন্ত ০.৯৮ কিলোমিটার লম্বা রাস্তাটি আর তৈরি হয়নি। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ ছিলই। মঙ্গলবার ‘পথশ্রী’ প্রকল্পে ফের ওই রাস্তার কাজের উদ্বোধনের তোড়জোড় হতে দেখেই বাধা দিলেন তাঁরা। বিক্ষোভও হল। উদ্বোধকদের কার্যত তাড়িয়ে দেন গ্রামবাসী। তাঁদের দাবি, আগে রাস্তা হোক। পরে কাজের বোর্ড লাগানো হোক বা নারকেল ফাটানো।

Advertisement

হুগলির সিঙ্গুর থেকে এ দিন ‘পথশ্রী-রাস্তাশ্রী’ প্রকল্পে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে যে ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তার কাজের সূচনা করলেন, তার মধ্যে রয়েছে নুরুল্লাপাড়ার ওই ঢালাই রাস্তার কাজও। সেটি করার কথা জেলা পরিষদের। এ জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩৪ লক্ষ ৫৯ হাজার ৮৮০ টাকা।

রাস্তার কাজের উদ্বোধনের জন্য এ দিন মঞ্চ তৈরি হয়েছিল নুরুল্লাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রচার হয়েছিল কাজের সূচনা করতে আসবেন উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল মাজি। কিন্তু তিনি আসেননি। সকাল থেকেই গ্রামবাসী বিক্ষোভ শুরু করেন। ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের বোর্ড লাগাতে গেলে মহিলারা বাধা দেন। দুপুর দুটো নাগাদ মঞ্চের কাছে হাজির হন পঞ্চায়েত প্রধান শরিফা বেগম এবং ব্লকের কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ার ও শাসক দলের নেতারা। কিন্তু বিক্ষোভের জেরে তাঁদের ফিরে যেতে হয়।

Advertisement

মানুষের অসন্তোষের কথা মেনে নিলেও কাজের উদ্বোধন থেমে থাকেনি বলে দাবি করেছেন শরিফা। তিনি বলেন, ‘‘মঞ্চের কাছে না করলেও খানিকটা এগিয়ে একটি রাস্তার উপরে নারকেল ফাটিয়ে উদ্বোধন করেছি।’’ উলুবেড়িয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ ইলিয়াস বলেন, ‘‘এ দিন রাজ্যের সব রাস্তার কাজের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমরা নামেই বিভিন্ন জায়গায় উপস্থিত ছিলাম। নুরুল্লাপাড়ায় কী হয়েছে, খোঁজ নেব।’’

উল্টে পড়ে রয়েছে প্রকল্পের বোর্ড। নিজস্ব চিত্র।

কেন এত ক্ষোভ?

গ্রামবাসীরা জানান, তিন বছর আগে ঘটা করে কাজের সূচনা হলেও একটি ইটও পাতা হয়নি। কাজের বোর্ডের ছবি তুলে সরকারি লোকজন চলে যান। কাঁচা রাস্তাটির এমন অবস্থা, হাঁটাচলা দুষ্কর। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁধে করে হাসপাতালে বা ডাক্তারখানায় নিয়ে যেতে হয়। গাড়ি ঢুকতে চায় না।

রবীন ভুঁইয়া এবং শেখ শাহ আলম আলি নামে গ্রামের দুই প্রবীণ বলেন, ‘‘বছর ২৫ আগে বাম আমলে রাস্তায় মাটি ফেলা ও ইট পাতা হয়েছিল। তারপরে আর কাজ হয়নি। গ্রামের মানুষকে বারে বারে বর্তমান শাসক দল ধোঁকা দিচ্ছে। তাই গ্রামবাসীরাঠিক করেছেন আগে রাস্তা হবে, তারপরে বোর্ড লাগানো হবে। বিক্ষোভের মুখে পড়বেন জেনেই বিধায়ক এ দিন এলেন না।’’

তিন বছর আগে অর্থাভাবেই ওই রাস্তার কাজ শুরু করা যায়নি বলে মনে করছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। বিধায়ক নির্মল অবশ্য এ দিনের বিক্ষোভের পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘নুরুল্লপাড়ায় কয়েকজন বিজেপি নেতা কিছু যুবককে মদ খাইয়ে গোলমাল করার চেষ্টা করেছিলেন। তারা ঠিকাদারের কাছ থেকে তোলা আদায়ের চেষ্টা করছিল। তা সত্ত্বেও, আমরা রাস্তার কাজ শুরু করেছি।’’

অভিযোগ উড়িয়ে বাণীবন পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য খোকন রায়ের দাবি, ‘‘গ্রামবাসীরা শাসক দলের নেতাদের আর বিশ্বাসকরেন না। বোর্ডে লেখা ছিল, এ দিন থেকেই রাস্তার কাজ শুরু হচ্ছে।কিন্তু রাস্তা তৈরির কোনও সরঞ্জাম ফেলা হয়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement