চাঙড় ভেঙে পড়েছে রবিভাগ ডিহিপাড়া প্রাথমিক স্কুলে। নিজস্ব চিত্র।
সিলিংয়ে ভেঙে পড়া অংশ জোড়াতালি দেওয়া হয়েছিল। ফের ভেঙে পড়ল সেই অংশ।
ঘটনাচক্রে সে দিন এক শিক্ষক না আসায় স্কুলের ওই ঘরে ক্লাস হচ্ছিল না। ক্লাস চললে কী ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে পারত, তা ভেবে আতঙ্কিত সকলে!
৬ এপ্রিল ঘটনাটি ঘটেছে বাগনানের রবিভাগ ডিহিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বাগনান ২ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফের মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই কাজও নিম্নমানের হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিডিও জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে ঠিকা সংস্থা কাজ করেছিল, তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাদের দাবি, কাজে কোনও ত্রুটি নেই।’’
১৯৮৪ সালে দোতলা এই ভবন প্রতিষ্ঠা হয়। দোতলায় দু’টি হলঘর রয়েছে। সেখানেই চলে পঠনপাঠন। ভবনটি তৈরির কয়েক বছর পর থেকেই সেটি নড়বড়ে হতে শুরু করে। ২০২০ সালে আমপানে ভেঙে পড়ে ছাদের একাংশ। একটি ঠিকা সংস্থাকে সেই ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। বরাদ্দ হয়েছিল লক্ষাধিক টাকা।
কী হয়েছিল গত ৬ এপ্রিল?
শিক্ষকেরা জানান, ওই দিন এক শিক্ষক না আসায় দোতলার হলঘরে পঠনপাঠন হয়নি। সব ছাত্রকে বসানো হয়েছিল নীচের হলঘরে। দুপুরে প্রবল শব্দ শুনে শিক্ষকেরা দোতলার হলঘরে উঠে দেখেন, সিলিংয়ের যে অংশটি মেরামত করা হয়েছিল তা ভেঙে পড়েছে। মেঝে জুড়ে ছড়িয়ে আছে চাঙড়ের টুকরো। প্রধান শিক্ষক মৃন্ময় দাস বলেন, "ভাগ্য ভাল, ওই দিন এক জন শিক্ষক না আসায় উপরে পঠনপাঠন হয়নি। না হলে কী সর্বনাশ হত, ভেবে শিউরে উঠছি!’’
এক সময়ে এই স্কুলে প্রায় ২০০ পড়ুয়া আসত। এখন সংখ্যা কমতে কমতে মাত্র ৫৫। শিক্ষকদের অভিযোগ, বেহাল ভবনের কারণে অভিভাবকেরা সন্তানদের পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। ব্লক প্রশাসনের কাছে বিষয়টি জানানোর পরে সোমবার থেকে ফের কাজ শুরু হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষকের ক্ষোভ, ‘‘কাজটি ফের আগের মতোই নিম্নমানের হচ্ছে। আগের বার কাজের সময়েও আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। শোনা হয়নি। এ বারও দায়সারা ভাবে কাজটি হচ্ছে।’’
জেলা প্রাথমিক স্কুলশিক্ষা সংসদের সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘‘খুবই ভয়ংকর ঘটনা। কিন্তু স্কুল থেকে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। আমি ওই এলাকার স্কুল পরিদর্শকের কাছ থেকে খোঁজ নেব। পড়ুয়াদের নিরাপত্তায় গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।’’