শয্যাশায়ী চাঁপাডাঙার প্রশান্ত চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও চিকিৎসা পাচ্ছেন না। ফিরিয়ে দিচ্ছে নার্সিংহোম। ফের উঠল এমন অভিযোগ। এ বার হুগলিতে।
হুগলির চাঁপাডাঙার বাসিন্দা প্রশান্ত চক্রবর্তী পেশায় পুরোহিত। যজমানি করে আর নিজের সামান্য ৭ কাঠা জমি চাষ করে কোনও রকমে সংসার চালাতেন। কিন্তু বছর চারেক আগে ঘটে বিপত্তি। গাছ থেকে পড়ে গিয়ে কোমরের হাড় ভাঙে তাঁর। সে সময় চিকিৎসা করলেও পুরোপুরি সুস্থ হননি তিনি। চিকিৎসা করাতে গিয়ে জমি বিক্রি করতে হয়ে তাঁকে। তাঁর দাবি, এ পর্যন্ত প্রায় ৭ লক্ষ টাকা খরচ হলেও, এখনও সুস্থ হননি। শয্যাশায়ী হয়েই দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁকে। মা, স্ত্রী এবং দুই মেয়েকে নিয়ে অতি কষ্টে চলছে তাঁর সংসার। চিকিৎসা করাতে গিয়ে তাঁকে সর্বস্বান্ত হতে হয়েছে।
মাস চারেক আগে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড হাতে পান তিনি। আশার আলো আবার জেগে ওঠে। এ বার হয়তো সুস্থ হতে পারবেন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, সেই কার্ড নিয়ে একাধিক নার্সিং হোমের দরজায় দরজায় ঘুরেও মেলেনি চিকিৎসা পরিষেবা। প্রশান্তর পরিবারের দাবি, সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে জেলা প্রশাসন, এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। চোখের জল চেপে প্রশান্ত বলছেন, ‘‘চিকিংসার সুব্যবস্থা না হলে এ বার সপরিবার মৃত্যুবরণ করতে হবে।’’
প্রশান্তর দুরবস্থার কথা শুনে তারকেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফিরদৌস পারভিন বলেন, ‘‘ওঁর পরিবারের অবস্থা খুবই খারাপ। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ব্যবস্থা আমিই করে দিয়েছিলাম। গাড়ি ভাড়া করে কার্ড আনতে যাওয়ার মতো অবস্থা ছিল না। পরে আমরাই গাড়ি করে দিই কার্ড নিয়ে আসার জন্য। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও, যে সব নার্সিংহোম বা বেসরকারি হাসপাতাল চিকিংসা করেনি, তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনকে বলব ব্যবস্থা নিতে। আর প্রশান্ত বাবুর যাতে চিকিংসা হয় সেটা দেখা হবে।’’
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তীর আশ্বাস, ‘‘এমন কয়েকটি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে অভিযুক্ত নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’’