আধার ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে কোটি টাকার প্রতারণা গাজিয়াবাদে। প্রতীকী ছবি।
হুগলির যুবকের আধার ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে কোটি টাকার প্রতারণা গাজিয়াবাদে। তারই তদন্তে এ রাজ্যে এসে ওই যুবকের বাড়িতে গেল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। চুঁচুড়া থানার বাসিন্দা ওই যুবকের পরিবার ও প্রতিবেশীদের দাবি, তাঁর নথি বেআইনি ভাবে ব্যবহার করে কেউ বা কারা ওই প্রতারণা করেছে। এ ব্যাপারে ওই যুবকের কোনও ভূমিকা নেই। গাজিয়াবাদ পুলিশ একাধিক বার ওই যুবকের বাড়িতে আসায় তাঁর পরিবার যথেষ্ট আতঙ্কে। এমনকি মধ্যরাতেই পুলিশ তাঁদের বাড়িতে হানা দিয়েছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে ওই যুবকের পরিবার রাজ্য পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালের লিফ্ট অপারেটর সৌভাগ্য দাস। চুঁচুড়া থানার ধরমপুরে তাঁর বাড়ি। মাসখানেক আগে গভীর রাতে হঠাৎ তাঁর বাড়িতে কড়া নাড়ে গাজিয়াবাদ পুলিশ। সৌভাগ্যের আধার কার্ডের ফোটোকপি ও মোবাইল নম্বর দেখিয়ে জানতে চাওয়া হয় সে সব তাঁর কি না। সৌভাগ্যের পরিবার জানায়, হ্যাঁ। এর পর পুলিশ জানায়, গাজিয়াবাদে এক কোটি টাকা প্রতারণা হয়েছে। সেখানে সৌভাগ্যের আধার ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। এ কথা শুনে হতবাক হয়ে যায় তাঁর পরিবার।
সৌভাগ্য দাসের স্ত্রী কাজল দাস। নিজস্ব চিত্র।
সৌভাগ্যের স্ত্রী কাজল দাস বলেন, “স্বামীর ছয় হাজার টাকা বেতন আর শ্বাশুড়ি পরিচারিকার কাজ করে যা পান, তা দিয়েই টেনেটুনে সংসার চলে। কোটি টাকা চোখেই দেখিনি কোনও দিন। কে, কাকে, কী ভাবে প্রতারণা করল জানি না। অথচ পুলিশ এসে বলছে, সাদা কাগজে সই করে দিতে।”
গত ১৩ জানুয়ারি আবার পুলিশ আসে সৌভাগ্যের বাড়িতে। সেই সময় তিনি বা তাঁর স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। সৌভাগ্যের মাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁর ছেলে কোথায়? সৌভাগ্যের ফোন নম্বরও চাওয়া হয়। কিন্তু সেই নম্বর দিতে পারেননি বৃদ্ধা। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ আধার কার্ড ও ফোন নম্বর নিয়ে চলে যায়। চুঁচুড়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রত্না অধিকারী বলেন, “গাজিয়াবাদের পুলিশ আসার খবর আমাকে জানান ওঁরা। পরিবারটি খুবই গরিব। ফোনের সিম তোলা বা কোনও ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে হয়তো আধার কার্ড দিয়ে থাকতে পারে। টালির ঘরে থাকে। যদি প্রতারণা করে তা হলে এ ভাবে থাকত না। আমি চাই ছেলেটি কোনও ভাবেই যাতে মিথ্যা ফেঁসে না যায়।”
আবার কবে পুলিশ আসবে এই আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে সৌভাগ্যের পরিবারের। তাই চুঁচুড়া থানায় গিয়ে বিষয়টি জানায় তারা। পুলিশ জানিয়েছে, যদি অপরাধ না করে থাকে, তা হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। অনেক সময় সাইবার অপরাধের তদন্তে এই ধরনের ঘটনা সামনে আসে। আধার, ফোন নম্বর বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ব্যবহার করে প্রতারণা হয় যা অনেকে জানতেও পারেন না।