ব্যান্ডেল স্টেশনে অাধুনিক পদ্ধতি খতিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। ছবি: তাপস ঘোষ
ট্রেনের গতি বাড়বে আর দুর্ঘটনাও কমবে—যাত্রী নিরাপত্তায় সারা দেশের প্রায় একশো স্টেশনে ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেম (ইআইএস) চালু হয়েছে। রাজ্যের খড়্গপুর স্টেশনেও রয়েছে ৮০০ রুট। এ বার সেই তালিকায় জুড়ল হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখার ব্যান্ডেল জংশনও। ইআইএস-এর মাধ্যমে ১০০২টি রুট চালু করা হল। চলতি মাসের ৩০ তারিখ থেকে এই আধুনিক পদ্ধতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর।
পূর্ব রেলের এসএসসি-হাওড়া (সিগন্যাল ওয়ার্কস) অনিল মণ্ডল বলেন, ‘‘বর্তমান প্রযুক্তির ফলে আরও বেশি নিরাপত্তা পাওয়া যাবে। এত বড় রুট দেশের আর কোথাও নেই। নতুন পদ্ধতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হলে যাত্রীদের যাতায়াতেরও অনেক সুবিধা হবে।’’
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিলিতি আমলের ‘রুট রিলে ইন্টারলকিং সিস্টেম’ বদলেই এই নতুন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। গত ১৩ই মে থেকে কাজ শুরু করেছে রেল দফতর। সে কারণেই হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখায় ১৩ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত ৮০ টির উপর লোকাল ও এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি ১৩মে থেকে আগামী ২৬মে পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা করে ব্যান্ডেল স্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী ২৭ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত ব্যান্ডেল স্টেশনে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইআইএসের মাধ্যমে ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে সব থেকে বড় রুট হবে ব্যান্ডেল স্টেশন। এর মাধ্যমে ট্রেন কতদূর রয়েছে তা দুটি বড় প্যানেল বোর্ডের মাধ্যমে মনিটারে দেখা যাবে। ডুয়েল সিস্টেমে এই কাজ চলবে। কোনওভাবে একটি অকেজো হয়ে পড়লে অন্যটি কাজ করবে। জার্মান প্রযুক্তিতে তৈরি এই বিশেষ পদ্ধতি চালু হলে শীতকালে কুয়াশার মধ্যে অথবা বর্ষার সময়ে সিগন্যাল বুঝতে চালকের কোনও অসুবিধা হবে না। ব্যান্ডেল স্টেশন থেকে হাওড়া, বর্ধমান, কাটোয়া এবং নৈহাটি রুটে ট্রেন চলাচল করে। এই নতুন ব্যবস্থার ফলে আগামী দিনে এই পথে অনেক বেশি ট্রেন অনেক দ্রুত যাতায়াত করতে পারবে বলেই আশা রেলকর্তাদের।
এই নতুন পদ্ধতিতে কাজ চলার ফলে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। ট্রেন কম থাকায় অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তা নিয়ে যাত্রীরা বহুবার ক্ষোভও জানিয়েছেন। তবে ব্যান্ডেলের বাসিন্দা অরিন্দম দাস বলেন, ‘‘শুনছি, নতুন পদ্ধতি চালু হলে দ্রুত ট্রেন চলবে। দুর্ঘটনা কমবে। এমন হলে এই কয়েক দিনের ভোগান্তি হাসিমুখে মেনে নিতে আশা করি কারও
সমস্যা হবে না।’’