football

football coaching: দশের উদ্যোগে ডানা মেলছে ৬০ খুদে

এরপরের পরিকল্পনা ওই কচিকাঁচাদের জন্য ক্যারাটে ক্লাস। সঙ্গে কম্পিউটার ক্লাস।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

ডানকুনি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:২৪
Share:

শরীরচর্চার প্রশিক্ষণ চলছে কচিকাঁচাদের। ছবি: দীপঙ্কর দে

শুরুটা হয়েছিল করোনাকালে কোভিড আক্রান্তদের খাবার বিলি দিয়ে। এরপর ধীরে ধীরে স্কুল পড়ুয়াদের পড়াশোনায় তালিম দেওয়া। তার সঙ্গে কচিকাঁচাদের ফুটবল মাঠে নামিয়ে ফেলাও গিয়েছে।

Advertisement

এরপরের পরিকল্পনা ওই কচিকাঁচাদের জন্য ক্যারাটে ক্লাস। সঙ্গে কম্পিউটার ক্লাস।

প্রায় দেড় বছর ধরে অতিমারির আবহে যখন বলা হচ্ছে পৃথিবী প্রায় থমকে গিয়েছে, তখন ডানকুনি, চণ্ডীতলা, মশাটের কোণে কোণে গিয়ে কাজ করে চলেছেন ওঁরা দশ জন। দশ জনে মিলেই স্বপ্ন দেখছেন এলাকার উন্নয়নে কিছু করার। ইতিমধ্যেই ওঁরা গড়ে তুলেছেন একটি সংগঠন। সেই সংগঠনের সভানেত্রী অমৃতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, স্বামী-সন্তান নিয়ে তিনি আগে থাকতেন ব্রিটেনের ম্যানচেস্টারে। করোনা চলাকালীন গত বছর দেশে ফেরেন। ডানকুনিতে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। এখানে এসে আরও ন’জনের সঙ্গে মিলে প্রথমে শুরু করেছিলেন করোনা আক্রান্তদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ।

Advertisement

এরপর অমৃতারা খেয়াল করলেন, যাঁরা বিত্তশালী নয় (হয়তো মুদির দোকানে কাজ করেন অথবা মাঠে গিয়ে চাষের কাজে সাহায্য করেন) তাঁদের সন্তানদের এই অতিমারির সময় পড়াশোনা কিছুই হচ্ছে না। অমৃতারা সেই সব ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় তালিম দিতে উদ্যোগী হলেন। মোট ৬০ জন পড়ুয়াকে বিভিন্ন জায়গায় ভাগে ভাগে আপাতত অঙ্ক এবং ইংরেজির তালিম দিচ্ছেন তাঁরা। এর পর বিজ্ঞান পড়ানোরও চেষ্টা চলছে।

অমৃতা জানালেন, এই কাজে উৎসাহিত হয়ে জায়গা দিয়েছেন অনেকেই। মশাটে একটি ক্লাবে, চণ্ডীতলায় একটি মন্দিরের চত্বরে, নৈটিতে একজনের বাড়ির দালানে তালিম দেওয়া চলছে। গোবরার বাসিন্দা ইরা চন্দ্র নিজের বাড়ির একাংশ ছেড়ে দিয়েছেন কচিকাঁচাদের পড়াশোনার জন্য। এ ভাবে প্রতি জায়গায় সপ্তাহে দু'দিন করে পড়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে।

এই ৬০ পড়ুয়াই সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। অমৃতার ব্যাখ্যা, ‘‘মনে হয়েছিল, ক্লাস এইটে যাওয়ার আগে এদের ভিত একটু শক্ত হওয়া প্রয়োজন। মাসের পর মাস স্কুল বন্ধ। বাড়িতেও এদের পড়ানোর কেউ নেই। তাই শেখার ক্ষেত্রে এদের অনেকখানি ফারাক হয়ে গিয়েছে। পড়াতে গিয়ে আমরা দেখলাম, ইংরেজি এবং অঙ্কে এদের ভিত খুবই কাঁচা।’’

ইংরেজি পড়ান অমৃতা। অঙ্কের দায়িত্বে সংগঠনের অন্য সদস্য রাতুল মুখোপাধ্যায়। যে দিন ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসে, সে দিন ওরা টিফিনও পায়। পড়াশোনার অগ্রগতি বুঝতে নিয়মিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। ওদের উৎসাহিত করার জন্য পুরস্কারও দেওয়া হয় বলে জানালেন অমৃতা।

এই তালিমের পাশাপাশি কচিকাঁচাদের ফুটবল খেলার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। অমৃতা জানালেন, মেয়েরাও ফুটবল মাঠে আসছে। ফুটবল খেলার জন্য তাদের খুবই উৎসাহিত করা হচ্ছে। এর সঙ্গে ক্যারাটে ক্লাস দ্রুত শুরু করার চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কম্পিউটার ক্লাসও যাতে এরই মধ্যে শুরু করা যায়, সেই চেষ্টাও জোরকদমে চলছে।

এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তীর্থঙ্কর মুখোপাধ্যায় জানালেন, তাঁদের কাজে প্রশাসনের সহায়তা পেয়েছেন। পেয়েছেন স্থানীয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহায়তাও। এলাকার মানুষেরাও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তীর্থঙ্কর বলেন, "আশা করি, করোনা একদিন চলে যাবে। কিন্তু আমরা এই কাজ চালিয়ে
যেতে পারব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement