চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গিও ধরা পড়ছে এখন। সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জা তো রয়েছেই।
কয়েক সপ্তাহ আগেও কোভিডের এতটা বাড়বাড়ন্ত ছিল না। কিন্তু পুজোর পর থেকেই হাজারের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ। দেখা যাচ্ছে, জ্বর হওয়া সত্ত্বেও অনেকের কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে। কিন্তু তাতেও স্বস্তি নেই। চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গিও ধরা পড়ছে এখন। সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জা তো রয়েছেই। কয়েক দিনের জ্বর শারীরিক ভাবে দুর্বল করে দিচ্ছে রোগীদের। কোভিড হোক বা ডেঙ্গি-ইনফ্লুয়েঞ্জা, প্রতিটি রোগে জ্বর এলেও প্রতিটি অসুখেরই আলাদা আলাদা উপসর্গ রয়েছে। কোভিড যেমন সার্স-কোভ-২ প্রজাতির ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হয়, তেমনই ডেঙ্গি ভাইরাসের আক্রমণে ডেঙ্গি হয়।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, কার কী উপসর্গ—
কোভিড: জ্বর, কাশি থাকবে। স্বাদ-গন্ধ চলে যায়। গায়ে ব্যথা, বমি হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে। সর্দি, গলা ব্যথা, পেটের অসুখ হতে পারে। পেট খারাপ সাধারণত বাচ্চাদের বেশি হয়। শরীরে দুর্বলতা থাকে।
ডেঙ্গি: জ্বর থাকে। সর্দি-কাশি হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। গায়ে, হাতে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। বমি হতে পারে। গলায় ব্যথা থাকে না। পেট খারাপ হয়। জ্বর ছাড়ার সময় শরীর দুর্বল করে দেয়। রুচি চলে গেলেও স্বাদ-গন্ধ থাকে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা: জ্বর, গায়ে-গলায় ব্যথা থাকে। সর্দি-কাশি বেশি হয়। বমি হতে পারে। পেট খারাপ হয় না সাধারণত। শরীর দুর্বল থাকে। স্বাদ-গন্ধ যায় না। রুচি নাও থাকতে পারে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, কার কী উপসর্গ গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
কোভিডে শ্বাসকষ্ট বেশি হয়। ডেঙ্গি আর ইনফ্লুয়েঞ্জায় সে রকম শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকে না।
আরজি কর হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জ্যোতির্ময় পাল বলেন, ‘‘কোভিড, ডেঙ্গি, ইনফ্লুয়েঞ্জা-- এখন তিন ধরনেরই রোগী পাওয়া য়াচ্ছে। কোভিডের ক্ষেত্রে যেমন স্বাদ-গন্ধ চলে যায়, ডেঙ্গির ক্ষেত্রে আবার চোখে ব্যথা হয়। ইনফ্লুয়েঞ্জায় আবার কারও বেশি জ্বর হয়, আবার কারও কম জ্বর। ইনফ্লুয়েঞ্জা এক জনের থেকে অন্য জনে ছড়ায়। কোভিড রোগীর শারীরিক অবস্থা যতটা মারাত্মক হতে পারে, ইনফ্লুয়েঞ্জায় তা হয় না।’’
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ সুমন পোদ্দার বলছেন, ‘‘তিনটিই ভাইরাস-ঘটিত জ্বর। কোভিডের ক্ষেত্রে রোগীকে আলাদা রাখতে হয় কারণ, রোগীর হাঁচি, কাশি থেকে রোগ ছড়াতে পারে। একই রকম ভাবে ছড়ায় ইনফ্লুয়েঞ্জাও। তাই রোগীর আলাদা থাকাই উচিত। অন্য দিকে, মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গি। অন্যদের মধ্যে ছড়ানোর সম্ভাবনা না থাকলেও রোগীকে মশারির মধ্যে রাখা উচিত।’’