৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বড় নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দিয়েছেন। অভিযোগ, তাঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে যথার্থ নিয়ম মানা হয়নি। যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁরা সকলেই অপ্রশিক্ষিত।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর নতুন করে ৩৬ হাজার শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। এই শূন্যপদগুলিতে দ্রুত নিয়োগের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি। বলা হয়েছে, নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁরা আগামী চার মাস স্কুলে যেতে পারবেন। বেতন পাবেন প্যারা টিচার হিসাবে।
কিন্তু এখন প্রশ্ন হল, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে কী ভাবে? কারা সেই নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন? চাকরিই বা পাবেন কারা?
আদালত জানিয়েছে, ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরাই এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। সেই সঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে যাঁদের চাকরি গেল, তাঁরাও নিয়োগপ্রক্রিয়ায় নতুন করে চাকরির আবেদন জানাতে পারবেন। তবে এই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হলে সকলকেই প্রশিক্ষিত হতে হবে।
মোট ১ লক্ষ ২৫ হাজার টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীকে নিয়ে ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৪২ হাজার ৫০০ জন ইতিমধ্যে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। অর্থাৎ, বাকি রয়েছেন ৮২ হাজার ৫০০ জন চাকরিপ্রার্থী। এর সঙ্গে আরও ৩৬ হাজার চাকরিপ্রার্থী যুক্ত হবেন। চাকরি যাওয়া প্রাথমিক শিক্ষকেরা যদি এর মধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন, তবেই তাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন।
এই চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে তিন মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
নিয়োগ না পেয়ে অপ্রশিক্ষিত ১৪০ জন চাকরিপ্রার্থী হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। মামলাকারীরা সকলেই অপ্রশিক্ষিত। তাঁদের দাবি, সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে নম্বর বিভাজন-সহ তালিকা প্রকাশ হয়েছে। সেই তালিকায় দেখা যাচ্ছে তাঁদের থেকে কম নম্বর পেয়েও অনেক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছেন।
আরও অভিযোগ, এই ৩৬ হাজার প্রার্থীর নিয়োগে অ্যাপটিটিউড টেস্ট বা ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ঠিকমতো নিয়ম মানা হয়নি। এমনকি, সংরক্ষণের নিয়মও মানা হয়নি বলে অভিযোগ। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় লিখিত পরীক্ষা হবে না। লিখিত পরীক্ষার পরবর্তী এই দুই ধাপে চাকরিপ্রার্থীদের যোগ্যতা নির্ধারিত হবে।