ছবি: পিটিআই।
সূর্য অস্ত গিয়েছে বেশ কিছু ক্ষণ আগে। কপিলমুনির মন্দিরের সামনে থেকে সমুদ্র পর্যন্ত রাস্তায় ভিড় তখনও কমেনি। আলোয় সেজেছে গোটা রাস্তা। সেখান দিয়ে মন্দিরের দিকে এগোতে থাকা ভিড় সামলাতে গিয়ে ভরা শীতেও কার্যত ঘাম ঝরছে পুলিশকর্মীদের!
রবিবার রাত ১২টা ১৩ মিনিট থেকে মকরসংক্রান্তির পুণ্যস্নানের সময় শুরু হয়েছে। কিন্তু রাতে সাগরে জোয়ার থাকার কারণে কাউকেই ওই সময়ে সমুদ্রে নামতে দেওয়া হয়নি। সোমবার ভোর ৩টে থেকে শুরু হয়েছে স্নান। পুণ্যলগ্ন চলবে রাত ১২টা পর্যন্ত। স্নান শুরু হতেই গঙ্গাসাগরে মানুষের ঢল। ভোর থেকেই দেশ-বিদেশ থেকে আসা পুণ্যার্থীদের দখলে চলে গিয়েছে গোটা সাগরতট। জায়গায় জায়গায় বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গানবাজনার সঙ্গেই প্রার্থনা করতে দেখা গিয়েছে অসংখ্য মানুষকে। ভোর থেকেই ভক্তিমূলক গান বেজেছে সমুদ্রতটের আশপাশে। ভিড় এড়াতে ভোর ভোর স্নান সেরে কেউ মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। কেউ আবার সাগরে দাঁড়িয়ে সেরেছেন সূর্যপ্রণাম।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সোমবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় এক কোটি পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে সাগরে। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, এই সংখ্যাটা আরও কয়েক লক্ষ বাড়তে পারে। এত লোকসমাগম হওয়া সত্ত্বেও কেন গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলার শিরোপা দেওয়া হবে, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
স্নান ঘিরে সব রকম দুর্ঘটনা এড়াতে সাগরে অতিরিক্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন করার পাশাপাশি, স্পিড বোট নামিয়ে নজরদারি চালানো হয়েছে। নজরদারিতে রয়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরাও। দেখা গিয়েছে জেলা প্রশাসনের কর্তাদেরও। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সাগর মেলায় আসার পথে দু’জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হলেন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা প্রহ্লাদ সিংহ (৬৯) এবং রাজস্থানের বাসিন্দা মোহন লাল প্রজাপতি (৫৭)। ময়নাতদন্তর পর তাঁদের মৃতদেহ পরিবার পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত গঙ্গাসাগর মেলায় আসা ছ’জন অসুস্থ যাত্রীকে এয়ার লিফটের মাধ্যমে কলকাতায় বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।