নিজস্ব চিত্র
এক বছর আগের আমপানের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর জন্য কোমর বাঁধছে কলকাতা। ইতিমধ্যেই পুলিশ-প্রশাসন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সোমবার প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকা-সহ রাজধানী কলকাতার জন্যও আপৎকালীন ভিত্তিতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এমনকি, পুলিশকে বলা হয়েছে, স্থানীয় মুদিখানায় বেশ কয়েকদিনের জিনিসপত্র মজুত রয়েছে কি না, সে বিষয়েও খোঁজ নিতে হবে। যাতে ঘূর্ণিঝড়ে বিপুল ক্ষতি হলে কার্যত লকডাউনে অন্তত খাবারের কোনও অসুবিধা না হয়। স্থানীয় বিভিন্ন থানায় চাল থেকে শুরু করে শাকসব্জি মজুত রাখার কাজও শুরু হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, কলকাতা শহরের জন্য মোট চারটি নৌকা রাখা হয়েছে। যাতে প্রয়োজনে জলবন্দি লোকজনকে উদ্ধার করা যায়। এর মধ্যে দু’টি নৌকা রাখা হচ্ছে আলিপুরের জন্য। একটি রাখা হচ্ছে উত্তর কলকাতার জন্য। চতুর্থটি দক্ষিণ কলকাতার জন্য। সিভিল ডিফেন্সকেও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। ৩০০ সিভিক ভলান্টিয়ারকে তৈরি রাখা হচ্ছে উদ্ধারকাজের জন্য। গোটা রাজ্যের জন্য ৩৫টি এনডিআরএফ (ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিলিফ ফোর্স বা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী) দল এসেছে রাজ্যে। তার মধ্যে কলকাতার জন্য ১০টি দলকে নির্দিষ্ট করে রাখা হচ্ছে। তা ছাড়াও রাখা হচ্ছে কলকাতা পুলিশের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীকে। তাদের পাঁচটি বাহিনী থাকবে।
কলকাতা পুলিশের আটটি কুইক রেসপন্স টিম (ঘটনা ঘটলে যারা দ্রুত এলাকায় পৌঁছতে পারে) তৈরি থাকছে ঘূর্ণিঝড়ের পর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায়। প্রয়োজনে ওই টিমের সংখ্যা আরও একটি বাড়িয়ে ৯ করা হতে পারে। লালবাজারে তৈরি হয়েছে ‘ইউনিফায়েড কমান্ড সেন্টার’। কলকাতা পুলিশের এলাকায় প্রতিটি ডিভিশনে অন্তত দু’টি করে পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্স (কর্মা) তৈরি রাখা হচ্ছে। পাশাপাশিই, প্রতিটি ডিভিশনে রাখা হচ্ছে আরও দু’টি করে অ্যাম্বুল্যান্সও। ঝড়ে গাছ পড়ে গেলে সেগুলি কেটে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য ২২টি দল রাখা হচ্ছে। প্রতিটি দলে পাঁচজন করে কর্মী থাকছেন। অর্থাৎ, গাছ কাটার জন্য ১১০ জন কর্মী থাকছেন। কলকাতা পুরসভার ১৬টি বরোতেই যোগাযোগের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন রাখা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলে তার মোকাবিলা করার জন্য সিইএসসি-তেও পুলিশের আধিকারিক থাকবেন।