প্রতীকী ছবি।
সময়োচিত যথাযথ চিকিৎসায় অনেক দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মানুষ মুক্তি পাচ্ছেন। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্য প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশ ও তৎপরতা সত্ত্বেও রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের ‘রেফার রোগ’ সারছে না!
স্বাস্থ্য ভবন বার বার নির্দেশিকা জারি করার পরেও একের পর এক হাসপাতাল ঘুরে রোগীর ঠাঁই মেলেনি বলে অভিযোগ করছেন স্বজনেরা। এ বার সেই ‘রোগ’ আরও কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর। তাদের নতুন ব্যবস্থাঅনুযায়ী কোনও রোগীকে রেফার করা হলে সেটা নথিভুক্ত করতে হবে দফতরের অনলাইন পোর্টালেও। রোগীকে কেন রেফার করা হচ্ছে, সেই কারণের সঙ্গে কোন হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে, তার নামও নথিভুক্ত করতে হবে।
বুধবার রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ও অন্য শীর্ষ কর্তারা। স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, অনলাইনে তথ্য নথিভুক্ত করার ব্যবস্থাপনা আগে চালু হলেও অনেক জায়গায়তেই তা ঠিকমতো ব্যবহার করা হচ্ছিল না। কিন্তু রাজ্যে চিকিৎসা পরিষেবার মান আরও বাড়াতে সেই ব্যবস্থাকে দ্রুত সচল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানানো হয়েছে, পরিকাঠামো বা শয্যার অভাবে জেলার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্রায়ই রোগীকে শহরের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু সেখানে নির্দিষ্ট ভাবে কোনও হাসপাতালের নাম উল্লেখ করা হয় না। শহরেও অনুরূপ ঘটনা ঘটে। তাতে ভোগান্তি বাড়ে রোগীদের। এ বার তাতে রাশ টানতে ‘কড়া দাওয়াই’ হিসেবে অনলাইনে রেফার করা রোগীর তথ্য নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, অনলাইন পোর্টালে রোগীকে রেফার করার কারণ, হাসপাতালের নাম ছাড়াও রোগী যে-অ্যাম্বুল্যান্স বা গাড়িতে অন্যত্র যাচ্ছেন, তার নম্বরও তুলতে হবে। পুরো বিষয়টি দেখভাল করার দায়িত্ব দেওয়া হবে সহকারী সুপার পদমর্যাদার এক জনকে। রেফার করা হাসপাতালে রোগী ভর্তি হতেপারছেন কি না, নিশ্চিত করবেন তিনিই। একই ভাবে রোগী যে-হাসপাতালে যাচ্ছেন, সেখানকার সহকারী সুপারকেও পুরো বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে।
এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এ বার থেকে ছুটির সময় রোগীকে দেওয়া ‘ডিসচার্জ সার্টিফিকেট’-ও পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে। প্রতিটি রোগের জন্য নির্দিষ্ট কোড নম্বর-সহ তথ্য আপলোড করলে স্বাস্থ্যকর্তারাও রোগীর চিকিৎসার যাবতীয় তথ্য সহজে দেখে নিতে পারবেন। অনেক সময়েই শিক্ষক-চিকিৎসকদের একাংশ পর্যাপ্ত অস্ত্রোপচার করছেন না বলে অভিযোগ ওঠে।
নতুন নির্দেশে জানানো হয়েছে, এ বার থেকে প্রত্যেক চিকিৎসককে অস্ত্রোপচারের পরে তার যাবতীয় তথ্য পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে। প্রতি মাসে সেই সব তথ্য অডিট করে দেখা হবে। শহরের এক মেডিক্যাল কলেজের কর্তা বলেন, ‘‘২০১৯-এ এউ উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। কিন্তু মাঝখানে থমকে যায়। পুরোটা অনলাইনে নথিভুক্ত করলে স্বাস্থ্য ভবন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলি সম্পর্কে প্রতিনিয়ত তথ্য জানতে পারবে সহজেই।’’