Dengue

‘সম্ভাব্য ডেঙ্গি’, মৃত্যুর শংসাপত্র হাসপাতালে

রবিবার জ্বর নিয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন বেলিয়াতোড়ের ছান্দার পঞ্চায়েতের তালান্দা গ্রামের অশোক তুং (৪২) বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান। মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা ‘প্রোবাবল ডেঙ্গি’।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০১
Share:

শোকার্ত: কান্নায় ভেঙে পড়েছে নাসিরের মেয়ে। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়।

ক’দিন আগে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে রোগীর মৃত্যুর কারণ হিসাবে শংসাপত্রে লেখা হয়েছিল ‘অজানা জ্বর’। সরকারি হাসপাতালে তিন দিন রোগী ভর্তি থাকার পরে কী ভাবে জ্বরের কারণ ধরা পড়ল না, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ। এ বার বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে এক রোগীর মৃত্যুতে কারণ হিসাবে শংসাপত্রে লেখা হল, ‘প্রোবাবল ডেঙ্গি’ বা ‘সম্ভাব্য ডেঙ্গি।’ সরকারি হাসপাতালের এ হেন আচরণেও চিকিৎসক মহলের একাংশের কপালে ভাঁজ। ডেঙ্গির তথ্য গোপন নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনা এ সবের জেরে আরও প্রবল হচ্ছে বলে মত তাঁদের।

Advertisement

রবিবার জ্বর নিয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন বেলিয়াতোড়ের ছান্দার পঞ্চায়েতের তালান্দা গ্রামের অশোক তুং (৪২) বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান। মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা ‘প্রোবাবল ডেঙ্গি’। বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, “ম্যাক অ্যালাইজা পরীক্ষায় ওই রোগী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। তবে প্লেটলেট তেমন কমেনি। মাঝে খানিকটা সুস্থও হয়ে উঠছিলেন। হঠাৎই শ্বাসকষ্ট হয়ে মারা যান।’’

বাঁকুড়া জেলার চিকিৎসক তথা বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকারের কটাক্ষ, ‘‘সরকার ডেঙ্গি রুখতে পাচ্ছে না। কিন্তু ডেঙ্গিতে মৃত্যু হলে তা ধামাচাপা দিতে ডাক্তারদের দিয়ে সম্ভাব্য ডেঙ্গি লেখাচ্ছে!’’

Advertisement

এ দিকে, ঠান্ডা পড়তে শুরু করলেও ডেঙ্গি কাবু হওয়ার নাম নেই। মৃত্যুর ঘটনাতেও ছেদ পড়ছে না। দেগঙ্গার নুরনগর পঞ্চায়েতের বসনে বেনাপুর মাঠপাড়ার মহম্মদ নাসির আলিকে (৩১) জ্বর-গায়ে শুক্রবার আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরিবারের দাবি, সেখানে রক্ত পরীক্ষায় জানা যায়, প্লেটলেট ৪৩ হাজার নেমে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও ভর্তি নেওয়া হয়নি তাঁকে। কিছু ওষুধ লিখে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ি ফিরে আরও কাহিল হয়ে পড়েন ওই যুবক। বারাসতের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। পরে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে শনিবার মারা যান। আরজিকরের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলছে পরিবারটি।

দত্তপুকুর থানার কোটরা ক্লিসপুর গ্রামের হরষিৎ ঘোষ (৩২) দিন সাতেক আগে জ্বর নিয়ে বারাসত জেলা হাসপাতাল ভর্তি হন। পরে পাঠানো হয় আরজিকরে। শুক্রবার রাতে সেখানেই মারা গিয়েছেন তিনি।

বসিরহাট ১ ব্লকের গোটরা পঞ্চায়েতের পশ্চিম দন্ডিরহাট গ্রামের সঙ্গীতা মণ্ডলও (‌২৩) মারা গিয়েছেন জ্বরে ভুগে‌। শনিবার সকালে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই তরুণীর।

ছোট ছোট দুই সন্তান তাঁর। এ দিন বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, তারা দিব্যি খেলে বেড়াচ্ছে। মা যে আর ফিরবে না, সে কথা বোঝার বয়স হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement