ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের পর হুল দিবসকে হাতিয়ার করে জনসংযোগ বাড়াতে তৎপর হয়েছে শাসক দল। প্রশাসনিক স্তরেও আয়োজন করা হচ্ছে নানা কর্মসূচি। যদিও সার্বিক ভাবে আদিবাসী সমাজের অংশগ্রহণ নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। কারণ, আদিবাসীদের সর্বোচ্চ সামাজিক সংগঠন-ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল ফের ‘বিভাজনের রাজনীতি’র অভিযোগ তুলেছে।
আজ, শনিবার হুল দিবস। রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত চার জেলায় রাজ্য সরকারের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় ভাবে রাজ্য স্তরের পাঁচটি হুল দিবসের অনুষ্ঠান হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম জেলায় হুল দিবসের রাজ্য স্তরের অনুষ্ঠানটি হচ্ছে ঝাড়গ্রাম ব্লকের কেচন্দা এলাকায়। সেখানে থাকার কথা শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। ঝাড়গ্রামেরই সাঁকরাইলের কুলটিকরিতে হুল দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনা অনুষ্ঠানে থাকার কথা পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর। এছাড়া বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও বীরভূম জেলায় একটি করে অনুষ্ঠান হবে।
হুল দিবসের সঙ্গে সাংগঠনিকভাবে জড়িয়ে থাকতে শাসক দলের তরফে চেষ্টার ত্রুটি রাখা হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার গোপীবল্লভপুরে মিছিল হয়। নেতৃত্বে ছিলেন নয়াগ্রমের বিধায়ক দুলাল মুর্মু। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘দল ও দলীয় শাখা সংগঠনের সকলকে সরকারি হুল দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বলা হয়েছে।’’ এ বার পঞ্চায়েত ভোটে জঙ্গলমহলে তৈরি হয়েছিল ‘আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ’। ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছিল, জুয়ান গাঁওতার নেতা প্রবীর মুর্মুকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে পাল্টা আদিবাসী সামাজিক সংগঠন। যাকে বিভাজনের রাজনীতি বলেই অভিযোগ করেছিল ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল। হুল দিবসের ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ করছে তারা। ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের সর্বভারতীয় নেতা (দিশম পারগানা) নিত্যানন্দ হেমব্রম অবশ্য বলছেন, ‘‘আদিবাসী সমাজকে বিভাজনের নীতি নিয়েছে প্রশাসন। তবে এটা ফলপ্রসূ হবে না। আমরা সমাজের ডাকে শিলদায় হুল দিবস উদযাপন করব। সমাজের সবাই সেখানে যোগ দেবেন।’’
গড়বেতায়ও আদিবাসীদের নিয়ে হুল উৎসব পালন করছে তৃণমূল এবং সিপিএম। সরাসরি না হলেও এই দুই পক্ষের সমর্থনে গড়বেতায় শনিবার হুলদিবস পালিত হবে বিভিন্ন স্থানে। সাতটি স্থানে তৃণমূলের এসসি -এসটি সেলের পক্ষ থেকে আদিবাসীদের নিয়ে এই উৎসব পালন করা হবে। অন্যদিকে, সিপিএম আদিবাসী অধিকার মঞ্চের ব্যানারে গড়বেতায় নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করবে হুল উৎসব।