ভিক্ষার থালা নিয়ে প্রতিবাদ। শুক্রবার, হাওড়ায়। —নিজস্ব চিত্র
বেতনের দাবিতে অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ জানালেন হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির কর্মীরা। রীতিমতো থালা-বাটি হাতে রাস্তায় রাস্তায় ‘ভিক্ষা’ করতে দেখা গেল হাওড়ায়।
লকডাউনের পর থেকেই বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে হগলি নদী জলপথ পরিবহণের কর্মীদের। বেশ কিছু দিন ধরে দাবিদাওয়া জানানোর পর পুজোর আগে এক মাসের বেতন পেয়েছেন। কিন্তু এখনও পুজোর বোনাস ও দু’মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে তাঁদের। কর্মীরা বলেন, ‘‘সংসার চলছে না। পেট চালাতে ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।’’ তাঁদের অভিযোগ, বার বার দাবি জানানো সত্ত্বেও তাঁদের কথায় কর্ণপাত করা হচ্ছে না। তাই কর্তৃপক্ষের টনক নড়াতে এই পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
শুক্রবার দুপুরে হাওড়া ফেরিঘাট সংলগ্ন জলপথ পরিবহণ ভবনের সামনে প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হন তাঁরা। হাতে থালা-বাটি নিয়ে পথচলতি মানুষের কাছে প্রতীকী ভিক্ষাও চেয়েছেন। কর্মীরা জানিয়েছেন, একাধিক বার রাজ্য সরকারের কাছে আর্জির পর সমবায় দফতরের তরফে দু'কোটি টাকা তাঁদের সাহায্য করা হয়। তাঁদের অভিযোগ, এর পর এক মাসের বেতন পেলেও পুজোর বোনাস পাননি। বাকি রয়েছে আরও দু’মাসের বেতন। প্রতিবাদে অংশ নেওয়া কর্মীদের বক্তব্য, রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়ের কাছে তাঁরা দরবার করেছেন। জলপথ পরিবহনের প্রশাসক আমানুল ইলাল তাঁদের সঙ্গে দেখা করছেন না।
দেখুন ভিডিয়ো:
আরও পড়ুন: গরুপাচার-কাণ্ডে দিল্লিতে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার ‘কিংপিন’ এনামুল হক
মন্ত্রী অরূপ রায় অবশ্য শীঘ্রই বেতন মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার আর্থিক সাহায্য ইতিমধ্যেই করেছে। জলপথ পরিবহনের প্রশাসককে দায়িত্ব দেওয়া আছে। তিনি সমস্ত কিছু দেখে শীঘ্রই সব মিটিয়ে দেবেন। ইতিমধ্যেই বেশ কিছুটা বেতন দেওয়া হয়ে গিয়েছে। বকেয়া বেতন ও খুব শীঘ্রই পেয়ে যাবেন জলপথ পরিবহণের কর্মীরা।’’ যদিও এ দিন জলপথ পরিবহণের কোনও আধিকারিক এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি।
আরও পড়ুন: অমিতের মুখে ‘তোষণ-অভিযোগ’ দক্ষিণেশ্বরে, সৌগত শেখালেন ‘যত মত তত পথ’
লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। এর পর তা চালু হলেও লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় পর্যাপ্ত যাত্রী হচ্ছে না। নবান্ন সূত্রে খবর, যাত্রী না হওয়ায় প্রতি দিন কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতির মুখ দেখছে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ নিগম। সে কারণেই বেতনে জটিলতা। তবে ইতিমধ্যেই রেল-রাজ্য যৌথ বৈঠকে আগামী বুধবার থেকে ফের লোকাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ট্রেন চললে যাত্রীসংখ্যা বাড়বে। মন্দা কাটিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়াবে সমিতি। এই আশাতেই বুক বাঁধছেন কর্মীরা।