প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গের বৌদ্ধ গুম্ফাগুলিতে জঙ্গি হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ-এর (জেএমবি) কয়েক জন মহিলা সদস্য গুম্ফায় ঢুকে আত্মঘাতী হামলা চালাতে পারে বলে জানানো হয়েছে মন্ত্রকের বার্তায়। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, বাংলাদেশেও বৌদ্ধ মঠগুলিতে একই ধরনের হামলা হতে পারে বলে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি জেনেছে। ঢাকাকে এ ব্যাপারে সতর্কও করা হয়েছে বলে খবর। নর্থ ব্লকের বার্তা পেয়ে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরও পুলিশ সুপারদের এ নিয়ে ‘চরম সতর্কবার্তা’ পাঠিয়েছে। গুম্ফাগুলির উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। স্বরাষ্ট্র দফতর জানাচ্ছে, রাজ্যে এখন ১৩০টি বৌদ্ধ গুম্ফা রয়েছে। ফলে জেএমবি যদি হামলার ছক কষে তা হলে বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে।
স্বরাষ্ট্র দফতর জানাচ্ছে, এ রাজ্যে দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কালিম্পংসহ উত্তরবঙ্গের বৌদ্ধ মঠগুলি সবই প্রায় মহাযান ধারার। দক্ষিণবঙ্গের গুম্ফাগুলি থেরবাদ মেনে চলে। এ ছাড়া বেশ কিছু চিনা বৌদ্ধ গুম্ফাও রয়েছে। কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া ছাড়া বাকি সব জেলাতেই বৌদ্ধ মঠ রয়েছে।
দেশের সমস্ত গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সমন্বয় কমিটি মাল্টি এজেন্সি সেন্টারের (ম্যাক) মে মাসের বৈঠকে জেএমবি’র আত্মঘাতী মহিলা ‘বম্বার’ পাঠিয়ে হামলা চালানোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। বুদ্ধপূর্ণিমাকে বেছে নিয়ে জেএমবি এগোচ্ছে, এ তথ্যও পান গোয়েন্দারা। পরে ম্যাক নবান্নকে সতর্ক করে।
দেশীয় বৌদ্ধ গুম্ফাগুলির পাশাপাশি রাজ্যের ছ’টি বিদেশি মঠের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্ধেগ বেড়েছে গোয়েন্দাদের। এদের মধ্যে শ্রীলঙ্কার অঙ্গারিকা ধর্মপাল প্রতিষ্ঠিত মহাবোধি সোসাইটির নাম সবার উপরে। এ ছাড়াও কলকাতায় তিনটি চিন পরিচালিত বৌদ্ধ মঠ এবং একটি করে জাপান ও মায়ানমার পরিচালিত মঠ রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বার্তায় বলা হয়েছে, মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন নিয়ে ক্ষিপ্ত বেশ কিছু জঙ্গি সংগঠন পাল্টা হামলার ছক কষছে। মদত করছে আইএসআই। সম্প্রতি ভারত সরকার রোহিঙ্গাদের পুশব্যাক করার নীতি নিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ঢুকে পড়া রোহিঙ্গাদের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানে হামলার ছক কষা হয়েছে। বুদ্ধগয়াতেও একই ধরনের হামলা হয়েছে বছর তিনেক আগে।
যদিও রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের একাংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গকে জঙ্গিরা ‘অভয়ারণ্য’ হিসাবে ব্যবহার করে। আশ্রয় নেয়, অস্থায়ী ঘাঁটি হিসাবে কাজ করে। ফলে বাংলায় হামলা চালানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবুও দ্রুত বদলে যাওয়া পরিস্থিতির বিচারে পুলিশ সুপারদের নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।