পরের ঘরে কাজ করে যা জোটে, তাতে সংসার চলে না। অনেক সময় উপরি জোটে গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রীর মুখঝামটা! মাঝেমধ্যে গৃহকর্তার বাড়িতে যৌন হেনস্থার মুখেও পড়তে হয়। কর্মস্থলে যৌন হেনস্থা প্রতিরোধ আইন নামে যে-‘রক্ষাকবচ’ রয়েছে, তা-ও নাগালের বাইরে থেকে যায় নিগৃহীত গৃহকর্মীদের। বছরের পর বছর আন্দোলন করেও সুরাহা হয়নি। লোকসভা ভোটের মুখে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে পরিচারিকাদের সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ গৃহ পরিচারিকা সমিতির অনুরোধ, নির্বাচনী ইস্তাহারে তাঁদের জ্বালাযন্ত্রণার কথা এবং দাবিদাওয়াকে জায়গা করে দিতে হবে।
ওই সংগঠনের দাবি, তাদের সদস্য-সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। সদস্যদের একাংশের অভিযোগ, অনেক পরিচারিকাকেই কর্মস্থলে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়। এই প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলির দফতরে জমা দেওয়া সমিতির স্মারকলিপিতে লেখা হয়েছে, কর্মস্থলে মহিলাদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বাজেটে মহিলা শ্রমিকদের জন্য বাড়তি অর্থ বরাদ্দ, মাতৃত্বকালীন ছুটি-সহ এক গুচ্ছ দাবি লিখিত ভাবে রাজনৈতিক দলগুলির দফতরে পাঠাচ্ছে ওই সংগঠন। সমিতির বক্তব্য, ওই সব দাবি নিয়ে তারা রাজনৈতিক সহমত চাইছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দাবিতে মিছিল করেন সমিতির সদস্যেরা। সংগঠনের সভানেত্রী বিভা নস্কর জানান, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে যাতে তাঁদের দাবিদাওয়ার কথা উঠে আসে, সেই লক্ষ্যেই সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপির কার্যালয়ে দরবার শুরু করেছেন তাঁরা। বিভাদেবী বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূল কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সীর সঙ্গে দেখা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে আমাদের।’’ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন বলেন, ‘‘আমার কাছে এই বিষয়ে কথা বলতে কেউ আসেননি। যদি আসেন, নিশ্চয়ই কথা বলব।’’ সিপিএম নেতা রবীন দেবের সঙ্গে দেখা করার পরে এই বিষয়ে তাঁর আশ্বাস মিলেছে বলে দাবি বিভাদেবীর। তিনি জানান, প্রদেশ কংগ্রেস এবং রাজ্য বিজেপির কার্যালয়ের তরফেও সমিতির স্মারকলিপি গ্রহণ করা হয়েছে।