Holi

দোলের দিন শ্রীরামপুরের দে পরিবারে হয় দুর্গা পুজো, সুগন্ধা গ্রামে বসে মেলা

শ্রীরামপুরের দে পরিবারের পুজোয় দুর্গার দু’পাশে কার্তিক, গণেশ, লক্ষী, সরস্বতীর বদলে থাকেন তাঁর দুই সখী জয়া-বিজয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২১ ২২:৩৮
Share:

শ্রীরামপুরের দে পরিবারে দোলের দিন রাধাকৃষ্ণের বদলে দুর্গার পুজো করা হয়। —নিজস্ব চিত্র।

কোথাও দুর্গা পুজো, কোথাও বা আবার বসে মেলা। হুগলি জেলায় দোলের দিনটি এ ভাবেই উদ্‌যাপিত হয়। দোলপূর্ণিমায় সাধারণত রাধাকৃষ্ণের পুজো করার প্রচলন রয়েছে। তবে শ্রীরামপুরের দে পরিবারে রাধাকৃষ্ণের বদলে দুর্গার পুজো করা হয়। শ্রীরামপুরের মতোই সুগন্ধা গ্রামেও ধুমধাম করে দোলের উৎসব হয়।

Advertisement

দোলের দিনে শ্রীরামপুরের দে পরিবারে দুর্গা পুজো হয়ে থাকে। ১২১২ বঙ্গাব্দে শ্রীরামপুরের পঞ্চাননতলায় দোলের দিন মহিষাসুরমর্দিনীর পুজোর প্রচলন করেন ওই পরিবারের দুই সদস্য পুলিনবিহারী দে এবং নগেন্দ্রনাথ দে। প্রচলিত মত অনুযায়ী, মহিষাসুরমর্দিনী আদতে দুর্গারই আর এক রূপ। তবে শ্রীরামপুরের দে পরিবারের পুজোয় দুর্গার দু’পাশে কার্তিক, গণেশ, লক্ষী, সরস্বতীর বদলে থাকেন তাঁর দুই সখী জয়া-বিজয়া।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর মতোই যাবচীয় রীতি মেনে ৪ দিন ধরে পুজো হয়। আগে এই পুজোয় মহিষ বলি দেওয়া হত। তবে দীর্ঘদিন ধরেই তা বন্ধ রয়েছে। ১৯৭০ সাল থেকে স্থানীয় শ্রীরামপুর টাউন ক্লাবের পরিচালনায় এই প্রাচীন পুজো হচ্ছে। এই দুর্গা পুজো উপলক্ষে অষ্টমীর দিন পংক্তিভোজনে পুজোর ভোগ বিতরণ করা হয়। আগে যাত্রাপালা হত, বসত কবিগানের আসর। তবে ইদানীংপুজোর ৩ দিন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

Advertisement

সুগন্ধা গ্রামে দোলের উৎসবে আবির খেলা। —নিজস্ব চিত্র।

দোলের দিন সকালে দুর্গার পায়ে আবির মাখিয়ে নিজেদের মধ্যে আবির খেলায় মেতে ওঠেন এলাকার মানুষজন।

সুগন্ধা গ্রামে আবার দোলের উৎসবে মেলা বসে। ওই গ্রামে গত চারশো বছর ধরে বসু পরিবারের চালু করা দোল উৎসব হয়ে আসছে। এই উৎসবের সূচনা করেছিলেন চিন্তামণি বসুরায়। দোলবাড়ির নাটমন্দিরে কালাচাঁদ দেব জিউ এবং রাধারাণীর দোলযাত্রা দেখতে ভোর থেকেই মানুষের ঢল নামে। দোলবাড়ির সামনে শুরু হয় আবির খেলা। সেই সঙ্গে দিনভর ধরে চলে পুজোপাঠ-হোম-যজ্ঞ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রতি বছরই দোলের আগের দিন চাঁচর হয়। সেখানে অশুভ শক্তির বিনাশের প্রতীকী হিসাবে ন্যাড়াপোড়া করা হয়। বসুরায় পরিবারের একাধিক নাটমন্দিরে বহু বিগ্রহ রয়েছে। দোলের দিন সেগুলোরও পুজো করা হয়।

দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে সুগন্ধায় ফি বছরই মেলা বসে। এক সপ্তাহ ধরে তা চলে। এ সময়টা সুগন্ধা গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই আত্মীয়-স্বজনরা আসেন। মেলাতেও ভিড় জমে যায়। জিলিপি-বাদাম ভাজা থেকে শুরু করে হরেক খেলনা, মনোহরি জিনিসপত্র বা ঘর সাজানোর পসরা নিয়ে বসেন দোকানিরা। নাগরদোলা থেকে ছোটদের মজার রাইড— সবই থাকে মেলায়। তবে চলতি বছরে করোনাবিধি মেনে মেলার আকার ছোট করা হয়েছে। দোলবাড়ি আর মন্দিরতলা মাঠে যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবার। এ বার তা-ও বন্ধ রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement