ছবি: এপি।
ঝলমলে রোদ থাকবে, কিন্তু চাঁদিফাটা গরম নয়। ভোরে বা সন্ধ্যায় থাকবে হিমেল ভাব। বসন্তোৎসবের চেনা এই আবহাওয়া গত কয়েক বছরে তেমন ভাবে পায়নি বাঙালি। সোমবার অবশ্য সেই ‘স্বাভাবিক’ ছন্দেই দোল কাটিয়েছে রাজ্যের বাসিন্দারা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এ দিন কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি কম। দমদমে এবং উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কিছুটা কম ছিল। ব্যারাকপুরে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৭.১ ডিগ্রি।
করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতায় বোলপুরে বসন্তোৎসব বাতিল করেছে বিশ্বভারতী। কিন্তু হাওয়া অফিসের থার্মোমিটার বলছে, এ বার সেখানে আদর্শ আবহাওয়া ছিল উৎসবের। এ দিন শ্রীনিকেতনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৯ ডিগ্রি। পুরুলিয়াতেও রাতের তাপমাত্রা নেমেছে ১৫ ডিগ্রিতে। বাঁকুড়া, আসানসোলের মতো রাজ্যের পশ্চিমি জেলাগুলিতে তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রির কাছেপিঠে ছিল। উত্তরবঙ্গে তরাই-ডুয়ার্সের জেলাগুলিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪-১৫ ডিগ্রির কাছে ঘোরাফেরা করছে।
আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্কে রঙের উৎসব ফ্যাকাসে, আবিরেই মেতে রইল কলকাতা
গত কয়েক বছরে শীত পেরোতে না-পেরোতেই গ্রীষ্মের হাজিরা মালুম হচ্ছিল। ঋতুচক্র থেকে বসন্ত পাকাপাকি ভাবে বিদায় নেবে কি না, সেই বিষয়েও জল্পনা ছিল আবহবিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদদের মধ্যে। কেউ কেউ বলছিলেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে জলবায়ু বদলে যাচ্ছে। তার ফলেই হেমন্ত ও বসন্তের মতো ঋতুগুলি মালুম হচ্ছে না। তা হলে এ বার বসন্ত মালুম হল কেন?
আবহবিদদের একাংশের মতে, এ বার দোল পড়েছে মার্চের গোড়ায়। তার উপরে এ বার শীত বিদায় নিলেও উত্তুরে হাওয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। ফলে শিরশিরে হিমেল ভাব অনুভূত হচ্ছে। সম্প্রতি হিমাচলে এক প্রস্ত তুষারপাতও হয়েছে। সব মিলিয়ে গাঙ্গেয় বঙ্গে বসন্তের উপস্থিতি বেশি অনুভব করা যাচ্ছে। তরাই-ডুয়ার্সের জেলাগুলিতে অবশ্য বসন্ত কিছুটা বিলম্বিত লয়েই বিদায় নেয়।
তবে আবহবিদদের অনেকে বলছেন, দোল পেরোলেই রাতের তাপমাত্রা গা-ঝাড়া দিতে পারে। কাল, বুধবার থেকে পশ্চিমি জেলাগুলিতে কোথাও কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। বৃহস্পতিবার বৃষ্টি হতে পারে কলকাতাতেও।
বুধবার থেকেই আকাশ মেঘলা হতে শুরু করবে। তার ফলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়তে পারে। অনেকেই বলছেন, বসন্তোৎসবের সঙ্গে সঙ্গেই বসন্তের বিদায়ঘন্টি হয়তো বাজবে। তবে এপ্রিলের আগেই প্রকৃতি নিষ্ঠুরতম রূপ ধারণ করবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।