তাজিয়ায় জল-বাতাসা দিলেন পুতুলেরা

জয়পুরের এই তাজিয়া এবং তাজিয়া দেখতে এলাকার বহু মানুষ ভিড় করেন। দর্শকদের মধ্যে থাকেন সব ধর্মের মানুষ। সব রকমের সহায়তাও করেন তাঁরা। 

Advertisement

নুরুল আবসার

জয়পুর শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০২
Share:

দেওয়া হচ্ছে জল-বাতাসা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

তাজিয়া দেখতে রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে ছিলেন উৎসুক গ্রামবাসীরা। তাজিয়া এগিয়ে আসতেই সবার হাতে জল-বাতাসা তুলে দিলেন পুতুল দলুই, সৌমেন সাউ, অশোক বাগেরা। মহরমের দিন সম্প্রীতির এই ছবি দেখা গেল হাওড়ার জয়পুর গ্রামে।

Advertisement

এই গ্রামের জয়পুর উত্তরপাড়া, মোল্লাপাড়া, মল্লিকপাড়া, ফকিরপাড়া, মধ্যপাড়া, কলতলাপাড়া, সাতভাইপাড়া, গেমোখালিপাড়া ও ছোট ফকিরপাড়া এই ন’টিপাড়ায় আলাদা আলাদা মহরম কমিটি আছে। প্রথা মেনে প্রতিটি কমিটি নিজেদের তাজিয়া নিয়ে গ্রামের প্রধান রাস্তা ধরে তাজিয়া নিয়ে এসে জমায়েত হন পুরনো হাস‌পাতালের মাঠে। সেখানে হয় মাতম (মহরমের বিশেষ ধর্মীয় রীতিনীতি পালন)। মাতম শেষে আবার প্রতিটি কমিটি যে যার তাজিয়া নিয়ে নিজেদের পাড়ায় ফিরে যায়। সেখানে হয় মঞ্জিল (সমাধি)।

জয়পুরের এই তাজিয়া এবং তাজিয়া দেখতে এলাকার বহু মানুষ ভিড় করেন। দর্শকদের মধ্যে থাকেন সব ধর্মের মানুষ। সব রকমের সহায়তাও করেন তাঁরা।

Advertisement

এদিন গাঁধী মোড়ের কাছে এক গামলা বাতাসা নিয়ে আসেন পুতুলদেবী। বছর পঞ্চাশের গৃহবধূ পুতুলদেবী বলেন, ‘‘আমি গত তিরিশ বছর ধরে এই কাজ করছি। আমরা ধর্মীয় বিভেদের ধার ধারি না।’’ অন্যদিকে সাতভাইপাড়া মহরম কমিটির সম্পাদক নুর ইসলাম মল্লিক বললেন, ‘‘বহু বছর ধরে আমরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ পাশাপাশি বাস করছি। আমাদের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই। আমরা একে অপরের উৎসবে অংশগ্রহণ করি। মহরমের সময়ে সবাই আমাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।’’ মহরমের সময়ে যাতে শৃঙ্খলা বজায় থাকে তা দেখার জন্য হাজির ছিলেন আমতা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল-সহ পঞ্চায়েতের অন্যান্য কর্তারা। সুকান্তবাবু বলেন, ‘‘বিশৃঙ্খলা তো দূরের কথা, সম্প্রীতির ছবি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। এটাই বাংলার আসল সংস্কৃতি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement