আদালত থেকে বেরোনোর পর গৌরহরিকে নিয়ে উচ্ছ্বাস। নিজস্ব চিত্র।
একদিন আগেই নিজে জামিন পেয়েছেন। তাঁকে মালা পরিয়ে বরণ করেছিলেন দলীয় নেতৃত্ব। শুক্রবার সেই তৃণমূল নেতাই মালা নিয়ে হাজির হলেন জামিন পাওয়া আরেক নেতাকে অভ্যর্থনা জানাতে!
কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিকারিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা এবং তাঁর কয়েকজন অনুগামী নেতার বিরুদ্ধে। তাতে দিবাকর এবং শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি-সেচ কর্মাধ্যক্ষ গৌরহরি মাজিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দিবাকর জামিন পেয়েছেন বৃহস্পতিবার। শুক্রবার তমলুকের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে গৌরহরির জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।
জামিন পাওয়ার পরে গৌরহরিকে মালা পরিয়ে অভ্যর্থনা জানান স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানে ছিলেন দিবাকর, ধলহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আতিয়ার রহমান। তাঁরা গৌরহরির গলায় মালা পরিয়ে দেন। আতিয়ারকে আবার গৌরহরিকে চুমু খেতেও দেখা যায়। বৃহস্পতিবার একই ভাবে মালা পরিয়ে দিবাকরকে ‘বরণ’ করেছিলেন আতিয়ার।
অন্য দিকে, আধিকারিককে মারধরের ঘটনায় জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই দিবাকরকে সাসপেন্ড করেছেন। শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহ-সভাপতি শোভা সাউকে। তবে জামিন পাওয়ার পর দিবাকর ফের সভাপতি পদে ফিরে আসতে পারেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত সমিতি’র সভাপতি পদে দিবাকরের ফেরা রুখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। দিবাকরের অনুগামী ঘনিষ্ঠ নেতা-কর্মীদের মধ্যে কয়েকজন ছাড়া বাকিদের নিয়ে ব্লক তৃণমূলের সাংগঠনিক কাজকর্ম চালাতে উদ্যোগী হয়েছেন দলের ব্লক নেতৃত্ব।
এ দিন নোনাকুড়ি বাজারে নজরুল মঞ্চে একটি সভা ডেকেছিলেন ব্লক তৃণমূল আহ্বায়ক শরৎ মেট্যা। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি মেচেদা বাজার সংলগ্ন শান্তিপুর নবীন সঙ্ঘ ফুটবল ময়দানে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর জনসভা রয়েছে। সেই সভার প্রস্তুতি হিসাবেই এ দিনের বৈঠক। সেখানে পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মণ, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বিভাস কর, অপূর্ব জানা-সহ দলের অঞ্চল সভাপতি-সহ বুথ স্তরের কর্মীদের ডাকা হয়েছিল। তবে তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন দিবাকরের অনুগামী হিসাবে পরিচিত পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য উত্তম সাউ, অর্ধেন্দু মাইতি এবং পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সমর ঘড়া প্রমুখ। বৃহস্পতিবার দিবাকর জামিন পাওয়ার পরে আদালত চত্বরে গিয়েছিলেন উত্তম।
দলের একাংশের মতে, ব্লক তৃণমূলের ডাকা এই প্রস্তুতি সভায় দিবাকর অনুগামীদের মধ্যে কারা উপস্থিত হচ্ছেন এবং কারা অনুপস্থিত থাকছেন, তা নজর রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানানো হবে। ব্লক তৃণমূল আহ্বায়ক শরৎ মেট্যা অবশ্য বলেন, ‘‘ব্লকে দলের ১৪২ জন পঞ্চায়েত সদস্য এূং ৩০ জন পঞ্চায়েত সমিতি সদস্যের প্রায় সবাই এসেছেন। দিবাকরকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ওকে ছাড়া অন্য নেতাদের ডাকা হয়েছিল। মেচেদার জনসভাকে সফল করতে আমরা ব্লকের সমস্ত নেতৃত্ব, পঞ্চায়েত প্রতিনিধি ও দলের কর্মীদের নিয়ে আলোচনা করেছি।’’