প্রতীকী ছবি।
বেসরকারি ব্যাঙ্কের যুক্তি ছিল, দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ৯০ দিনের মধ্যে ডেবিট কার্ডে বিমার টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন জানানোটাই নিয়ম। ডেবিট কার্ডের বিমা সংক্রান্ত এই সময়সীমা সোমবার বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় শর্ত অনুযায়ী পাঁচ লক্ষ টাকা না-পেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন তাঁর স্ত্রী। বেসরকারি ব্যাঙ্ক ৯০ দিনের মধ্যে আবেদনের সময়সীমার কথা জানায়। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এ দিন সেই সময়সীমা বাতিল করে ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, ১২ দিনের মধ্যে মৃতের স্ত্রীর হাতে পাঁচ লক্ষ টাকা তুলে দিতে হবে।
বনানী বসু নামে ওই মহিলার কৌঁসুলি স্মরজিৎ রায়চৌধুরী জানান, তাঁর মক্কেলের স্বামী গৌতম বসু মৌড়িগ্রামে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থায় কাজ করতেন। ওই দম্পতির এক ছেলে এবং এক মেয়ে। ২০১৭ সালের ২৭ মে সকালে গৌতমবাবু বাজার করতে গিয়ে ট্রাকের ধাক্কায় মারা যান। আমদাবাদের সদর দফতর আছে, এমন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ডেবিট কার্ড ছিল তাঁর। কার্ড করানোর সময় ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানিয়েছিলেন, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে তাঁর পরিবার পাঁচ লক্ষ টাকা পাবে।
স্মরজিৎবাবু জানান, বনানীদেবী তাঁর স্বামীর মৃত্যুর মাস তিনেক পরে, ২৯ অগস্ট ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষের কাছে ওই টাকার জন্য আবেদন করেন। কর্তৃপক্ষ তাঁর আবেদনে সাড়া দেননি। তার জেরে ২০১৮ সালের ২০ ও ২৪ জুলাই ব্যাঙ্কের সদর দফতরে আইনি নোটিস পাঠান ওই মহিলা। একই সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ‘অম্বাডসম্যান’-এ অভিযোগ জানানো হয়। ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষ অম্বাডসম্যানে জানান, আবেদন জানানোর সময়সীমা ৯০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে আবেদন করা হলে বিমার টাকা দেওয়া যেত। তা শুনে ‘অম্বাডসম্যান’ ওই মহিলার অভিযোগ খারিজ করে দেয়।
তার পরে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বনানীদেবী। এ দিন ব্যাঙ্কের পক্ষে আইনজীবী সায়নী রায়চৌধুরী অম্বাডসম্যানে পেশ করা বক্তব্যই আদালতে জানান। কিন্তু বিচারপতি ভট্টাচার্য সেই যুক্তি মানেননি। তিনি জানিয়ে দেন, দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ পেতে বেসরকারি ব্যাঙ্কের ওই সময়সীমা তিনি বাতিল করে দিচ্ছেন। মহিলার প্রাপ্য পাঁচ লক্ষ টাকা দ্রুত মিটিয়ে দিতে বলেন বিচারপতি।