—প্রতীকী ছবি।
তেরো বছর আগে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় নিম্নাঙ্গের সাড় হারিয়েছিলেন বরাহনগরের বাসিন্দা পলাশ দাস। ২০২০ সালে রাজ্য প্রতিবন্ধী কমিশনারের শংসাপত্রে তাঁকে ১০০ শতাংশ প্রতিবন্ধী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। তিনি যাতে প্রতিবন্ধী হিসাবে জীবিকার সুযোগ পান সেই সুপারিশও করেছিলেন কমিশনার। তবুও প্রশাসন তাতে কান দেয়নি।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট প্রকল্পের অধীনে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসককে পলাশের জন্য বরাহনগরে তাঁর বাড়ির কাছাকাছি একটি দোকান বা ব্যবসার জায়গার বন্দোবস্ত করে দিতে হবে। পলাশের জন্য একটি উপযুক্ত হুইল চেয়ারের বন্দোবস্ত করতেও বলেছেন বিচারপতি।
পলাশের আইনজীবী সুতীর্থ নায়েক জানান, দুর্ঘটনার পরে পলাশের বুকের নীচ থেকে পুরোটাই অসাড় হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে তাঁর বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। ২০২০ সাল থেকে তাঁর আবেদন প্রশাসনের কাছে পড়ে ছিল। বস্তুত, প্রশাসন যে এ ব্যাপারে অনীহা দেখিয়েছে তা বিচারপতির পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে এবং তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে কোনও প্রতিবন্ধীর জীবন-জীবিকার সাহায্যে প্রশাসন তার দায় এড়িয়ে যেতে পারে না।
আদালতের খবর, এই মামলায় প্রতিবন্ধীদের আর্থিক পুনর্বাসনের জন্য সরকারি প্রকল্পের কী অগ্রগতি তা জানতে চেয়ে রিপোর্ট তলব করেছিলেন বিচারপতি ভট্টাচার্য। কিন্তু একাধিক শুনানির পরেও প্রশাসনের তরফে সেই রিপোর্ট জমা পড়েনি। নির্দেশের লিখিত প্রতিলিপিতে তা উল্লেখ করেছেন বিচারপতি। তা দেখে অনেকেরই প্রশ্ন, পলাশ না হয় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে নিজের জন্য নির্দেশ পেয়েছেন। কিন্তু রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এমন কত অসহায় মানুষের আর্জি সরকারি ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে থাকতে পারে। তাঁদের আর্থিক পুনর্বাসনের কী হবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা।