ফাইল চিত্র।
স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র চেয়ারম্যানের যোগ্যতা নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। এ বার উচ্চ আদালতের অন্য এক এজলাসে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) যোগ্যতাও পড়ল প্রশ্নের মুখে।
মঙ্গলবার কয়লা পাচার কাণ্ডে ইডি-র তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে উচ্চ আদালত। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপ্ত-সহায়ক সুমিত রায়ের বিরুদ্ধে কয়লা কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে ইডি। সুমিতকে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে ইডি-র কাজকর্ম নিয়ে এ দিন ওই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে তিরস্কার করেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা।
সুমিতের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে আইনি রক্ষাকবচ আগেই দিয়েছিল কোর্ট। এ দিন সেই রক্ষাকবচ সংক্রান্ত শুনানিতেই ইডি-র কৌঁসুলি আদালতে জানান, সলিসিটর জেনারেল অন্য মামলায় ব্যস্ত আছেন। তাই শুনানির দিন পিছিয়ে হোক। সুমিতকে কেন কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না, প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তাঁকে কড়া সুরে বলতে শোনা যায়, “তদন্তকারী সংস্থা কি এতই অযোগ্য যে, এক জন সাক্ষীকে কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারছে না? আদালত তো তদন্ত করতে নিষেধ করেনি।”
এই মামলায় ইডি-র তরফে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ নেই কেন, সেই প্রশ্নও তুলেছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে কোর্টের পর্যবেক্ষণ, মাত্র দু’বার সমন পাঠিয়েই চুপ করে গিয়েছে ইডি! এই আচরণ গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানায় আদালত। তারা সুমিতের আইনি রক্ষাকবচের মেয়াদ আরও দু’মাস বাড়িয়ে দিয়েছে। এই নিয়ে তিন বার তাঁর রক্ষাকবচের মেয়াদ বাড়ানো হল।
কয়লা পাচার মামলায় সুমিতকে নোটিস পাঠিয়ে তলব করে ইডি। তার বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।
তদন্তে স্থগিতাদেশ না-দিলেও সুমিতকে আপাতত গ্রেফতার করা যাবে না বলে জানায় আদালত। সুমিতকেও তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, কয়লা কেলেঙ্কারির মামলাটি রুজু করেছে তাদের দিল্লির সদর দফতর।
সদরের অফিসারেরাই তদন্ত করছেন। তাই এই মামলায় জড়িত সকলকেই দিল্লিতে তলব করা হচ্ছে। অভিষেকবাবুও দিল্লি গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন। মামলার যাবতীয় নথিপত্র দিল্লির অফিসেই রয়েছে। তাই দিল্লির সদর দফতর ছাড়া অন্যত্র জিজ্ঞাসাবাদ করার ক্ষেত্রে সমস্যা আছে।
ইডি সূত্রের আশঙ্কা, এই মামলায় কোনও এক জনকে দিল্লির
বাইরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে বাকিরাও সেই যুক্তি দেখিয়ে
নিজেদের পছন্দমাফিক জায়গায় জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে চাইবেন। তাতে সমস্যা আরও বাড়বে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হতে পারে ইডি।