রাজ্যে বিভিন্ন পুরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কেন সেগুলিতে ভোট করানো হয়নি, সেই প্রশ্ন তুললেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর।
আসানসোল, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, কুলটি, বালি, রাজারহাট-গোপালপুর ও বিধাননগর এই ৭টি পুরসভার মেয়াদ ফুরোলেও সেগুলির নির্বাচনের দিন ঘোষণা না হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। শুক্রবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে তার শুনানি হয়। সেখানেই রাজ্য সরকারের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, ওই পুরসভাগুলির কয়েকটিকে জুড়ে পুরনিগম তথা কর্পোরেশনে পরিণত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিছু পুরসভাকে অন্য কর্পোরেশনের সঙ্গে যুক্ত করার কাজ চলছে। তাইওই পুরসভাগুলির নির্বাচনের দিন এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
হাইকোর্ট এই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হয়নি। ডিভিশন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির প্রশ্ন, “প্রশাসনিক প্রয়োজনের খাতিরে পুর নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঠিক না করাটা কি সংবিধানিক প্রয়োজনের ঊর্ধ্বে?” রাজ্যের তরফে জিপি অভ্রতোষ মজুমদার জানান, রাজ্য এ ব্যাপারে তার বক্তব্য হলফনামা আকারে পেশ করবে।” সোমবার ওই হলফনামা আদালতে পেশ করা হতে পারে।
জনস্বার্থে এই মামলাটি করেছেন প্রণয় রায় নামে এক ব্যক্তি। মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধান মোতাবেক কোনও পুরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তার পরবর্তী নির্বাচন করানোর কথা। নয়তো নাগরিকদের পুর পরিষেবা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এ ক্ষেত্রে পুরসভাগুলির মেয়াদ শেষ হয়েছে ছ’মাসেরও বেশি আগে। তবু রাজ্য সরকার সেগুলিতে দ্রুত নির্বাচন করাচ্ছে না।
রাজ্য সরকার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চকে জানিয়েছিল, ১৮ এপ্রিল কলকাতা পুরনিগমে ও ২৫ এপ্রিল রাজ্যের আরও ৯২টি পুরসভায় নির্বাচন করা হবে। কিন্তু বালি-সহ ৭টি পুরসভাকে তার সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি। এ দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় বলেন, “৯২টি পুরসভার নির্বাচন করার যে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে সেগুলিতে তো বটেই, এ ছাড়া আরও যে ৭টি পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়েছে সেগুলিরও নির্বাচন হওয়া উচিত। কমিশন চায়, যেগুলির মেয়াদ গত বছরের জুন মাসে শেষ হয়েছে তার সবগুলির নির্বাচন করা হোক।” অর্থাৎ, রাজ্য নির্বাচন কমিশন চায় রাজ্যের মোট ৯৯টি পুরসভার নির্বাচন একসঙ্গে হোক।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জানান, আদালতকে তাঁদের আইনজীবী জানাবেন, কমিশন সারা রাজ্যে একই দিনে ২৬ এপ্রিল ভোটের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু কলকাতা পুরনিগমের ভোট ১৮ এপ্রিল ও বাকি ৯২টি পুরসভার ভোট ২৫ এপ্রিল করতে চেয়েছে রাজ্য। কমিশন জানিয়েছিল, ১৮ এপ্রিল জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা রয়েছে। দিনটি বদল করা হোক। রাজ্য তা মানেনি। এখন প্রশ্ন সিবিএসসি পরীক্ষা নিয়ে। পরীক্ষা শেষ হবে ২০ এপ্রিল। ১৮ এপ্রিল ভোট হলে প্রচারে মাইক ব্যবহার করা নিয়ে সমস্যা হবে।