ফাইল চিত্র।
রূপান্তরকামী বা তৃতীয় লিঙ্গের ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির ক্ষেত্রে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কোনও সংরক্ষণ নীতি মেনে চলে কি না, তা জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে এমফিল করতে চেয়ে আলিয়া শেখ নামে এক রূপান্তরকামী নারীর দায়ের করা মামলার শুনানিতে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী।
মনস্তত্ত্ব বিদ্যায় এমএ পাশ করার পরে এমফিলের ফর্ম পূরণ করতে গিয়েই তিনি সমস্যায় পড়েন বলে জানান মহেশতলার বাসিন্দা আলিয়া। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘এমএ পাশ করার পরে আমি হলফনামা দিয়ে ‘আলিয়া শেখ’ নামে তৃতীয় লিঙ্গের এক জন মানুষ (রূপান্তরকামী নারী) হিসেবে নিজের পরিচয় দিই। কিন্তু এমফিলের ফর্মে শুধু পুরুষ বা মহিলা পরিচয়ে ভর্তির সুযোগ ছিল। তাই বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই।’’
২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের ‘নালসা রায়ে’ এ দেশে পেশাগত বা শিক্ষাগত সব ক্ষেত্রেই পুরুষ, মহিলার পাশে তৃতীয় লিঙ্গকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেই সঙ্গেই বলা হয়, তৃতীয় লিঙ্গভুক্তদের ওবিসি বা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি হিসেবে সংরক্ষণের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই বিধি কার্যকর হয়নি।
আলিয়ার আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ দে জানান, এ দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদালতে এমফিলের ফর্মের একটি নমুনা পেশ করে জানান, তাঁরা ভর্তির ফর্মে তৃতীয় লিঙ্গকেও স্বীকৃতি দিয়েছেন। তবে আদালতে ওই কৌঁসুলি জানান, তৃতীয় লিঙ্গকে স্বীকৃতি দিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই লিঙ্গের জন্য ওবিসি কোটায় সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই।
বিচারপতি চক্রবর্তী তার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌঁসুলি নীলোৎপল চট্টোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান, ওবিসি কোটায় তৃতীয় লিঙ্গের পড়ুয়াদের জন্য সংরক্ষণ রয়েছে কি না। তিনি জানান, এ ব্যাপারে রাজ্যের সংরক্ষণ নীতি আছে কি না, তাঁর জানা নেই। তবে সংরক্ষণ নীতির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জেনে এসে তিনি আদালতে জানাবেন। বিচারপতি চক্রবর্তী নির্দেশ দেন, কাল, শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য আদালতে জানাতে হবে।