ফাইল চিত্র।
যাঁর পরামর্শক্রমে তিনি নির্দেশ সত্ত্বেও বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে উপস্থিত হননি, সেই চিকিৎসক বৃহস্পতিবার এজলাসে হাজির হন। প্রেসক্রিপশন বা ব্যবস্থাপত্রের লেখার সঙ্গে সেই চিকিৎসকের হাতের লেখা মিলিয়ে দেখার পরে স্কুলশিক্ষক নিয়োগের মামলায় এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহকে আজ, শুক্রবার আবার তলব করেছে হাই কোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন নির্দেশ দিয়েছেন, আজ বেলা ২টোয় এসএসসি-র ওই উপদেষ্টাকে তাঁর এজলাসে উপস্থিত হতে হবে।
কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার ও সমরজিৎ আচার্য নামে এক আধিকারিকের সঙ্গে শান্তিপ্রসাদেরও বুধবার কোর্টে
হাজির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শারীরিক ভাবে অসুস্থ বলে জানিয়ে সে-দিন তিনি উপস্থিত হননি। তাঁর কৌঁসুলিরা এক চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন জমা দিয়েছিলেন। সেই প্রেসক্রিপশন আসল কি না, তা যাচাইয়ের জন্য বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে এজলাসে হাজির হতে বলেছিল কোর্ট।
দেবাশিস রায় নামে ওই চিকিৎসক এ দিন সকালে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে হাজির হন। চিকিৎসকের হাতের লেখার সঙ্গে প্রেসক্রিপশনের লেখা মিলিয়ে দেখেন বিচারপতি। তিনি জানান, দু’টিই এক হাতের লেখা। ওই চিকিৎসক ৪ মার্চ শান্তিপ্রসাদকে পাঁচ দিন বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন। কোমরের এক্স-রে করিয়ে অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতেও বলেছিলেন তিনি। শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী কমলেশ ভট্টাচার্য এ দিন আদালতে জানান, চলাফেরায় সমস্যার জন্য বুধবার পর্যন্ত শান্তিপ্রসাদ এক্স-রে করাতে পারেননি। অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞকেও দেখাতে পারেননি। তবে আদালত তলব করলে শান্তিপ্রসাদ আসবেন।
বিচারপতি জানান, তিনি এ দিনই শান্তিপ্রসাদকে ডেকে পাঠাবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পরে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, শুক্রবার শান্তিপ্রসাদকে কোর্টে হাজির হতে হবে এবং জবাব দিতে হবে কিছু প্রশ্নের। চিকিৎসকের দেওয়া প্রেসক্রিপশন, চিকিৎসকের হাতের লেখার নমুনাও মামলার নথির মধ্যে সংরক্ষণ করতে বলেছে আদালত।
রাজ্যের সরকার পোষিত এবং সরকার অনুমোদিত স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম ধরা পড়েছে, অভিযোগ উঠেছে ব্যাপক দুর্নীতির। প্যানেলের উপরে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চিত করে তুলনায় নীচে থাকা প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তো উঠেছেই। সেই সঙ্গে অভিযোগ, নিয়োগযোগ্য প্রার্থীদের প্যানেলের বাইরে থেকেও নিয়োগ হয়েছে বেশ কিছু ক্ষেত্রে। সেই ঘটনাতেই নাম জড়িয়েছে কমিশনের
উপদেষ্টা এবং নজরদার কমিটির। সেই কমিটিতে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের পদস্থ আধিকারিকেরাও ছিলেন। সরকারি কমিটির নজরদারি সত্ত্বেও কী ভাবে অনিয়ম হল, সেই প্রশ্ন যেমন উঠেছে, সেই সঙ্গে স্কুলশিক্ষক নিয়োগে বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছেন মামলাকারীরা।