—প্রতীকী চিত্র।
প্রথমে দার্জিলিং সদর থানার পাশে মোটর স্ট্যান্ডে জিলেটিন স্টিক দিয়ে আইইডি বিস্ফোরণ। কয়েক ঘন্টার মধ্যে ফের কালিম্পং থানায় বাইকে এসে গ্রেনেড হামলা। মারা গিয়েছেন এক জন। পুলিশকে লক্ষ করেই প্রত্যেকটি হামলার ছক বলে পরিষ্কার জানানো হয়েছে। তাই দেরি না করে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ছয়টি থানা এলাকা জুড়ে কড়া সতর্কতা জারি করা হল।
শনিবার গভীর রাত থেকেই নাকার তল্লাশির সংখ্যা বাড়ানো ছাড়াও ধরপাকড় শুরু হয়েছে। প্রত্যেক ওসি ও আইসিকে থানা এলাকায় টানা থাকার নির্দেশ জারি হয়।
রাতেই ভক্তিনগর থানার শালুগাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৩ মোর্চা কর্মীকে। এই নিয়ে গত দুই সপ্তাহে সমতলে ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হল।
পুলিশ সূত্রের খবর, সমতলের যে সমস্ত এলাকায় পাহাড়ের আন্দোলনের প্রভাব রয়েছে, সেখানে বেশি ন জর দেওয়া হয়েছে। শালুগাড়া, শালবাড়ি, দার্জিলিং মোড়, চম্পাসারি-দেবীডাঙা, খাপরাইল, দুর্গামন্দির, পানিঘাটা মোড়, এমএম তরাই বাগান, ভুট্টাবাড়ি-সহ বিভিন্ন এলাকায় সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয়েছে বিশেষ নজরদারি।
জাতীয় ও রাজ্য সড়কে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চলছে। পাহাড়ের সঙ্গে সমতলকে গোলমাল ছড়াতে হামলার আশঙ্কায় কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না পুলিশ।
রবিবার দুপুরে প্রত্যেক থানার আইসি ও ওসিদের নিয়ে টানা বৈঠক করেছেন পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ।
পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘তরাইয়ের কিছু এলাকায় আলাদা রাজ্যের দাবিদারেরা থাকেন। সেখানে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। নাকার সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতে প্রত্যেক থানাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বাসস্ট্যান্ড, বিমানবন্দর, স্টেশনের মত গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত পুলিশ থাকছে।’’
অফিসারেরা জানান, সম্প্রতি পাহাড়ের আন্দোলনকে সমতলে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু নকশালবাড়ি, শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় প্রতিরোধে তা কার্যকরী হয়নি।
এক দফায় সুকনায় পুলিশের উপর পেট্রোল বম্ব, তির ধনুক এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে আন্দোলনকারীদের একাংশের বিরুদ্ধে। কিন্তু পাহাড়ে নতুন করে পরিস্থিতি বদলেছে। তার উপরে গত ১৫ দিনে মাটিগাড়া থেকে ৫ জন, ভক্তিনগরে ৭ জন এবং প্রধানগরে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। সিআইডি ধরে একজনকে। এর মধ্যে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি, প্রাক্তন জিটিএ সদস্য ছাড়াও দুই জন যুব মোর্চার নেতা আছেন।
কমিশনারেটের কয়েক জন অফিসার জানান, শিলিগুড়িতে গোলমাল এড়াতে মিটিং মিছিল করা, জমায়েতের চেষ্টায় ১৪৪ ধারা জারি করে, টানা ধরপাকড় করে সামাল দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু দু’টি বিস্ফোরণের পর মনে হচ্ছে, অন্যরকম ভাবে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হতে পারে। মাস ছয়েক আগে মাল্লাগুড়ি থেকে নেপাল, পাহাড়ের ৩ বাসিন্দাকে কয়েকশ চোরাই জিলেটিন স্টিক, ডিটোনেটর-সহ গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাই ঝুঁকি নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।