ফাইল চিত্র।
জুনে পর্যাপ্ত বৃষ্টি পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। উত্তর ও দক্ষিণ, দুই বঙ্গেই বর্ষণ হয়েছে দফায় দফায়। কিন্তু চলতি জুলাইয়ে কি বর্ষার দাক্ষিণ্য কমতে পারে? মাসের গোড়ায় উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হলেও আবহবিদেরা মনে করছেন, আপাতত কিছু দিন তুলনায় বর্ষার মেজাজ ঝিমিয়ে থাকবে। তার ফলে তেমন জোরালো বৃষ্টি হবে না। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস
বলছেন, আগামী কয়েক দিন বৃষ্টি হবে। কিন্তু তার হার হবে স্বাভাবিকের থেকে কম।
আবহবিদেরা জানান, বঙ্গোপসাগর থেকে জোলো হাওয়ার জোগান আছে। ফলে তা ঘনীভূত হয়ে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরির অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে এবং সেই মেঘ থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনাও থাকছে। তবে তা হবে বিক্ষিপ্ত ভাবে।
এ বার জুনে স্বাভাবিকের থেকে বাড়তি বর্ষণ হয়েছে। ১ জুন থেকে ৪ জুলাই (রবিবার) পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ ৪৫২.৫ মিলিমিটার। এটা স্বাভাবিকের থেকে ২১ শতাংশ বেশি। দক্ষিণবঙ্গের হিসেবে ৩৯ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে জুনে তেমন বৃষ্টি না-হওয়ায় সব মিলিয়ে ঘাটতি রয়েছে ১৩ শতাংশ। আবহবিদেরা মনে করছেন, এখনও পর্যন্ত যা বৃষ্টি হয়েছে, তা যথেষ্ট আশাপ্রদ। তাঁদের অনেকে বলছেন, গত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছিল, জুনে গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষা তেমন সক্রিয় হচ্ছে না। বর্ষা জোরালো হচ্ছিল মূলত জুলাই-অগস্টেই। এ বার জুনে বঙ্গোপসাগরে একের পর এক নিম্নচাপ তৈরি হতে থাকায় গাঙ্গেয় বঙ্গে জোরালো বৃষ্টি হয়েছে।
আবহবিজ্ঞানীদের বক্তব্য, বর্ষার বর্ষণ কোনও সময়েই একটানা হয় না। এক দফা ভারী বৃষ্টির পরে কয়েক দিন বৃষ্টি কম হয় বা একেবারেই হয় না। নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণাবর্ত বর্ষাকে সক্রিয় করে। ফলে জুলাইয়ের দ্বিতীয়ার্ধে নিম্নচাপ বা শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্ত দানা বাঁধলে ফের সক্রিয় হতে পারে বর্ষা।
আবহবিদেরা বলছেন, এ বছর জুন থেকেই যা বৃষ্টি হয়েছে, তা আমন ধানের বীজতলা তৈরির উপযোগী। তার উপরে বিভিন্ন জলাধার, সেচখাল, নালাও জলে ভরে রয়েছে। ফলে জুলাইয়ে বর্ষার মেজাজ একটু ঝিমিয়ে থাকলেও ক্ষতির আশঙ্কা নেই।