শনিবার থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। —ফাইল চিত্র।
বুধবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত বুধবার শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে চলেছে। তার পর সেটি উত্তর-পূর্ব দিকে সরবে এবং তার পরে শক্তি বাড়িয়ে আগামী শুক্রবার সকালে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। শনিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। এমনটাই পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
বুধবার দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির পাশাপাশি ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে জেলাগুলিতে। বৃহস্পতিবার থেকে জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ সামান্য কমলেও শনিবার থেকে সমস্ত জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে উপকূলের জেলাগুলিতে সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। সমুদ্র উত্তাল থাকতে পারে বলে মৎস্যজীবীদের ২৩ তারিখের মধ্যে সমুদ্র থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে সমুদ্রে যেতে নিষেধও করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলায় ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
তা ছাড়া পূর্ব বাংলাদেশের উপর থাকা ঘূর্ণাবর্ত এবং উত্তরপ্রদেশ, বিহার হয়ে গাঙ্গেয় বঙ্গের উপর দিয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত থাকা অক্ষরেখার প্রভাবে ঝড়বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়ে রয়েছে। যদি ঘূর্ণাবর্ত শক্তি বৃদ্ধি করে নিম্নচাপে পরিণত হয় এবং সেই নিম্নচাপ আরও শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়, তা হলে তার নাম হবে ‘রেমাল’। নামটি ওমানের দেওয়া। আরবি শব্দ ‘রেমাল’-এর বাংলা অর্থ বালি। তবে ঘূর্ণিঝড় যে তৈরি হবেই, তা এখনও নিশ্চিত ভাবে জানায়নি আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি বুধবার উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সপ্তাহান্তে উত্তরের জেলাগুলি হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিতে ভিজতে পারে। বুধবার সকাল থেকেই আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতায়। সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়াও। বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় দুই ডিগ্রি বেশি। বুধবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির ঘরে থাকতে পারে। মঙ্গলবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.১ ডিগ্রি। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম।
ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তা বাংলার উপকূলের দিকেই ধেয়ে আসবে কি না, তা নিয়েও আবহবিদেরা কিছু জানাননি। এই আবহে আগামী ২৫ মে ষষ্ঠ দফার ভোট পরিচালনা নিয়ে চিন্তিত নির্বাচন কমিশন। বিপর্যয় মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ করা উচিত, তা নিয়ে বুধবার বৈঠকে বসছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাব। বুধবার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিবের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। সিইও দফতর সূত্রে খবর, বুধবার দুপুরে আলাদা করে ওই বিষয়ে দু’টি বৈঠক করবেন আরিজ। ওই বৈঠকে হাজির থাকবেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব। ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের জেলাশাসকেরা।