সম্পর্কে জাভেদ আখতার এবং শাবানা আজ়মির কন্যা। ভাই ফারহান আখতার বলিউডের অন্যতম ছবিনির্মাতা এবং অভিনেতা। বলিপাড়ার পরিচালকদের তালিকায় প্রথম সারিতে নাম লিখিয়েছেন তারকা-কন্যা। কিন্তু হিন্দি ফিল্মজগতে নিজের জায়গা তৈরি করতে বার বার হোঁচট খেয়েছিলেন জ়োয়া আখতার। শোনা যায়, তাঁর প্রথম ছবি মুক্তি পেতেই নাকি আট বছরের বেশি সময় লেগেছিল।
২০০৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে জ়োয়ার পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘লাক বাই চান্স’। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন জ়োয়ার ভাই ফারহান। ফারহানের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায় কঙ্কনা সেনশর্মাকে।
বলিপা়ড়া সূত্রে খবর, ‘লাক বাই চান্স’ ছবির মুখ্যচরিত্রের জন্য বিবেক ওবেরয়কে পছন্দ করেছিলেন জ়োয়া। কিন্তু এই চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব খারিজ করে দেন বিবেক। পরে অবশ্য এই ছবিতে ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
‘লাক বাই চান্স’ ছবির মুখ্য ভূমিকায় অভিনয়ের প্রস্তাব বিবেক ফিরিয়ে দিলে জ়োয়া তাঁর ভাই ফারহানের সঙ্গে কথা বলেন। দিদির ছবিতে অভিনয় করতে রাজি হন ফারহান।
‘লাক বাই চান্স’ ছবির মুখ্যচরিত্রের জন্য কঙ্কনা প্রথম পছন্দ ছিলেন না জ়োয়ার। বলিপাড়ার গুঞ্জন, বলি অভিনেত্রী তব্বুকে এই ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন জ়োয়া। কিন্তু তব্বু তা ফিরিয়ে দেন।
বলিপাড়ার অন্দরমহল থেকে জানা যায়, ‘লাক বাই চান্স’ ছবিটির চিত্রনাট্য নাকি মনঃপুত হয়নি তব্বুর। এমনকি নিজের চরিত্রগঠনেও পরিবর্তন চেয়েছিলেন। অভিনেত্রীর এই শর্ত মেনে নিতে পারেননি জ়োয়া। সেই কারণে নাকি এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন তব্বু।
তব্বু অভিনয় করতে না চাইলে কঙ্কনাকে ‘লাক বাই চান্স’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন জ়োয়া। পরিচালকের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান কঙ্কনা।
ফারহান এবং কঙ্কনা ছাড়াও ‘লাক বাই চান্স’ ছবিতে ১৭ জন খ্যাতনামী তারকাকে অভিনয় করতে দেখা যায়। ক্যামিয়ো চরিত্রে দেখা যায় তাঁদের। শাহরুখ খান, আমির খান, হৃতিক রোশন, রণবীর কপূর, করিনা কপূর খান, জন আব্রাহম, রানি মুখোপাধ্যায়, বোমান ইরানি, দিয়া মির্জ়া, জাভেদ আখতার এবং শাবানা আজ়মির মতো বলি তারকাদের ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়।
‘লাক বাই চান্স’ ছবিতে অতিথি শিল্পীদের তালিকায় ছিলেন পোশাকশিল্পী মণীশ মলহোত্র এবং বলি পরিচালক কর্ণ জোহর, রাজকুমার হিরানি।
তারকায় ভরা ‘লাক বাই চান্স’ ছবিটি ১৮ কোটি টাকা খরচ করে বানানো হয়। বলিপাড়া সূত্রে খবর, ভারতের বক্স অফিস থেকে ১৫ কোটি টাকার ব্যবসা করে এই ছবি।
তারকা-কন্যা জ়োয়ার পরিচালনায় প্রথম ছবি। সে ছবি মুক্তির পর দর্শকের কাছে মৌখিক প্রশংসা পেলেও বক্স অফিসের নম্বরের খেলায় জিততে পারেনি ‘লাক বাই চান্স’।
২০০১ সালে ‘দিল চাহতা হ্যায়’ ছবির হাত ধরে পরিচালনার জগতে আত্মপ্রকাশ করেন ফারহান। কানাঘুষো শোনা যায়, ২০০১ সালেই ‘লাক বাই চান্স’ ছবির জন্য চিত্রনাট্য লিখে ফেলেন জ়োয়া। কিন্তু ‘দিল চাহতা হ্যায়’ মুক্তির পর নিজের ছবির কাজও শুরু করতে চাইছিলেন তিনি।
‘লাক বাই চান্স’ ছবির শুটিং শুরু হয় ২০০৮ সালে। চিত্রনাট্য লেখার পর সাত বছর অপেক্ষা করতে হয় জ়োয়াকে। ছবি সংক্রান্ত নানা রকম কাজ নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
অবশেষে ২০০৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘লাক বাই চান্স’। কিন্তু তারকা-কন্যা জ়োয়ার প্রথম ছবিই বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। তার পর অবশ্য ‘জ়িন্দেগি না মিলেগি দোবারা’, ‘দিল ধড়কনে দো’, ‘গাল্লি বয়’-এর মতো সফল ছবি কেরিয়ারের ঝুলিতে ভরেন জ়োয়া।
বড় পর্দার পাশাপাশি ওটিটির পর্দায়ও নিজের জায়গা করে নেন জ়োয়া। ‘লাস্ট স্টোরিজ়’, ‘ঘোস্ট স্টোরিজ়’, ‘দ্য আর্চিজ়’ এবং ‘খো গয়ে হম কহাঁ’ নামের ছবিগুলি জ়োয়ার পরিচালনায় ওটিটির পর্দায় মুক্তি পায়। এমনকি জ়োয়ার ‘মেড ইন হেভেন’ ওয়েব সিরিজ়ও দর্শকের কাছে বহুল প্রশংসা পেয়েছে।