ফাইল চিত্র।
মেয়াদ ছিল ২০২৫ সাল পর্যন্ত। তা সত্ত্বেও তাঁকে যে-ভাবে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছেন রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা ম্যাকাউটের উপাচার্য সৈকত মৈত্র। সেই অপসারণ মামলার শুনানি মঙ্গলবার শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ।
সোমবার বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন, সৈকতবাবুকে উপাচার্যের পদ থেকে অপসারণের সরকারি ‘নোট শিট’ আদালতে পেশ করতে হবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এ দিন সরকারি নথি পেশ করেন। তিনি কোর্টে জানান, ম্যাকাউটের বিধি অনুযায়ী এ ভাবে উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া যায়। সৈকতবাবুর তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সৌম্য মজুমদার ও উত্তমকুমার মণ্ডল কোর্টে দাবি করেন, নতুন বিধি হলেও এ ভাবে উপাচার্যকে সরানো যায় না। উপাচার্য সরকারি আধিকারিক, তাই তাঁকে অপসারণের আগে কিছু প্রশাসনিক নিয়ম ও রীতি মানতে হয়।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোমবার জানিয়েছিলেন, ‘ম্যাকাউট আইন ২০০০’ বলবৎ হয়েছিল ২০০১-এর ২০ জুলাই। তার ৩০ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই আইন প্রয়োগের দু’বছর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্ট্যাটিউট (বিধি) অনুযায়ী ‘ডিফিকাল্টি রিমুভাল ক্লজ়’ আর লাগানো যায় না। শিক্ষামন্ত্রীর যুক্তি, গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি সৈকত মৈত্রের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু আইন বিভাগের মতে, চলতি বছরের ২৬ জুলাইয়ের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বিধি অনুযায়ী সেই নির্দেশের আর কোনও মান্যতা থাকার কথা নয়। ফলে ২৬ জুলাইয়ের পরে উনি আর উপাচার্য থাকতে পারেন না। শিক্ষা শিবিরের একাংশের দাবি, গত বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি সৈকতবাবুকে উপাচার্যের পদে দ্বিতীয় বার নিয়োগের নির্দেশে তাঁকে চার বছরের জন্য (২০২৫ পর্যন্ত) নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
এ দিকে, অপসারণ নিয়ে মামলার মধ্যেই মলয়েন্দু সাহা সোমবারেই ম্যাকাউটের উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েছেন। এই বিষয়টিও এ দিন কোর্টে ওঠে। পরে উত্তমবাবু বলেন, ‘‘কোনও দায়িত্ব গ্রহণের নথিতে স্বাক্ষরের সঙ্গে তারিখ থাকলেও সময় থাকে না। কিন্তু নতুন উপাচার্য সময় উল্লেখ করে সই করেছেন। উপরন্তু একই চিঠিতে দু’টি সইয়ের সময় ভিন্ন। এটা আমরা কোর্টে দেখিয়েছি।’’ এ দিনও মলয়েন্দুবাবু ম্যাকাউটে যান।