প্রায় পাঁচ মাস পরে ফের শুনানি শুরু হল কাটোয়া ধর্ষণ মামলার।
বৃহস্পতিবার কাটোয়া ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক কাজী আবুল হাসেমের এজলাসে পুরো ঘটনার বিবরণ দেন মামলার শেষ সাক্ষী, কেতুগ্রাম থানার তদন্তকারী অফিসার জয়জিৎ লোধ। বেলা সাড়ে ১০টা থেকে দু’দফায় পাঁচ ঘন্টা ধরে শুনানি চলে। আগামী ৫ ও ৬ অগস্ট এই মামলার তদন্তকারী অফিসারকে জেরা করবেন অভিযুক্তের আইনজীবী ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার জয়জিৎবাবু এজলাসে দাঁড়িয়ে জানান, ২০১২ সালের ১৬ জুন কাটোয়া উপসংশোধনাগারে ধৃত রেজাউল মির্জা ও স্বপন শেখের টি আই প্যারেড (চিহ্নিতকরণ) করানো হয়। অভিযোগকারিণী রেজাউল মির্জাকে চিনতে পারলেও অন্য জনকে চিনতে পারেননি। অভিযুক্ত রেজাউল মির্জাই ধর্ষণ করেছিল বলে আদালতে জানান অভিযোগকারিণীকে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, অভিযোগকারিণীর মেয়েও তাঁকে টিআই প্যারেডে চিনিয়ে দেয়। তদন্তকারী অফিসার আদালতে জানান, এই ঘটনার আগের দিন রেজাউলকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশের কাছে সে তার সমস্ত দোষ স্বীকার করে নিয়েছিল। এর আগে ওই বছরেরই ১০ মে অভিযোগকারিণী ও তাঁর মেয়ে ধৃত নয়ন শেখ ও ফরিদ শেখকে টিআই প্যারেডে চিনিয়ে দিয়েছিল।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, অভিযোগকারিণী ঘটনার দিন রাতে, ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি কাটোয়া জিআরপিতে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। ওই দিনই কীর্ণাহার থেকে আমোদপুর-কাটোয়া ছোট রেল ধরে বাড়ি ফেরার পথে কেতুগ্রামের পাঁচুন্দি স্টেশনের আগে ট্রেন আটকে ডাকাতি করার সময় মেয়ের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে অভিযোগকারিণীকে ট্রেন থেকে নামিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। তবে তিনি কোনও অভিযুক্তের নাম জানাতে পারেননি। পরের দিন রেল পুলিশের ডিজি, রাজ্য পুলিশের আইজিরা ঘটনাস্থলে এসে দফায় দফায় অভিযোগকারিণীকে জেরা করেন। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ডাকাতির ঘটনা রেল পুলিশ ও ধর্ষণের ঘটনা কেতুগ্রাম পুলিশ পৃথক ভাবে তদন্ত করবে। যদিও হাইকোর্টের নির্দেশে ওই মামলা দুটি ‘একত্র’ করে বিচার চলছে। ঘটনার চার দিন পরে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ ধর্ষণের মামলার দায়িত্ব নেয়। তদন্তকারী অফিসার জয়জিৎবাবু সিআইডির সাহায্য নিয়ে অভিযুক্তর ছবি আঁকান। সেই সূত্র ধরে জয়জিৎবাবু ৮ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট পেশ করেন। এর মধ্যে পুলিশের কাছে এখনও এক জন অধরা রয়েছে। সরকারি আইনজীবী কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় বলেন, “তদন্তকারী অফিসার অভিযোকারিণীর পোশাক, মোবাইল-সহ বাজেয়াপ্ত করা জিনিস চিহ্নিতকরণ করেছেন আদালতে।”