স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যের রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করতে চলেছে স্বাস্থ্য ভবন। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এবং রাজ্য সরকারের নতুন ‘রাত্তিরের সাথী’ নির্দেশিকা মেনে ইতিমধ্যেই ওই প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য গ্রহণ করা হয়েছে একাধিক ব্যবস্থা।
বৃহস্পতিবারই আরজি কর মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারকে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই স্বাস্থ্য ভবন থেকে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ। শুক্রবার ওই সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রেসিডেন্ট চিকিৎসকেরা যাতে সম্পূর্ণ নিরাপদে কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী স্ট্যাটাস রিপোর্ট দিয়েছি। নতুন সরকারি ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা ‘রাত্তিরের সাথী’ অনুযায়ী কাজও শুরু করেছি।’’ কী কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা-ও সবিস্তারে জানিয়ে নিগম বলেন, ‘‘আমরা আরও বেশি সংখ্যায় সিসি ক্যামেরা বসাচ্ছি। রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের ঘরের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ক্যাম্পাসগুলির সমস্ত এলাকা আলোকিত করার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এ ছাড়া হাসপাতালগুলির ক্যাম্পাসে এবং হস্টেলে অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হচ্ছে। যাঁদের মধ্যে থাকবেন মহিলা নিরাপত্তারক্ষীরাও।”
তবে রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থার ঘোষণার পাশাপাশি তাঁদের কাজে ফেরার অনুরোধও করেছেন স্বাস্থ্যসচিব। বৃহস্পতিবারই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় দেশের আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেছিলেন। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে দিল্লি এবং কল্যাণীর এমসের চিকিৎসকেরা কাজে ফিরেছেনও। শুক্রবার নিগম তাঁদের উদাহরণ দিয়েই রাজ্যের আন্দোলনকারী বাকি চিকিৎসকদের বলেছেন, ‘‘রেসিডেন্ট চিকিৎসকেরা আমাদের স্বাস্থ্য পরিষেবার মেরুদণ্ড। তাঁদের অনুপস্থিতি স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে যে সমস্ত দরিদ্র মানুষ চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের উপরেই নির্ভরশীল, তাঁরা এর ভুক্তভোগী হচ্ছেন। সিনিয়র ডাক্তারেরা এখন সর্বত্র পরিষেবা দিলেও রোগী অনুপাতে সেই পরিষেবা যথেষ্ট নয়।’’
আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যসচিবের বার্তা, ‘‘আমরা আপনাদের দাবি মেনে নিয়েছি। গত ২১ অগস্ট আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তাঁরা যে দাবি জানিয়েছিলেন, তার সবটাই মেনে নেওয়া হয়েছে। আরজি করের প্রিন্সিপাল এবং সুপারকে পরিবর্তন করা হয়েছে। আরজি করের বক্ষরোগের বিভাগীয় প্রধান এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরজি করে নতুন প্রিন্সিপাল এবং সুপার দায়িত্বে এসেছেন। আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের জন্য তদন্তকারী দলও গঠন করা হয়েছে। তাই এ বার তাঁরা কাজে ফিরুন।’’