নিজস্ব চিত্র।
হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর থেকে হুগলির বৈদ্যবাটি, কলকাতার বাঘা যতীন থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালি— রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকা তাঁরা। সামাজিক উন্নয়নের কাজে এমন শতাধিক প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একজোট হয়েছেন। নিজেরাই সামর্থ্য অনুযায়ী ত্রাণ তহবিল গড়েছেন। করোনা-আবহে লকডাউনের মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় খাবার, মহিলাদের স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা।
প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই ব্যাপারে যে-হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন, তার নাম ‘দ্য গেমচেঞ্জার’। গ্রুপের অন্যতম সদস্য, বর্ধমানের রায়নার শ্যামসুন্দর রামলাল আদর্শ বিদ্যায়তনের প্রধান শিক্ষক কল্যাণকুমার তা এবং আরও তিন স্কুলপ্রধান গিয়েছিলেন সোনারপর থেকে কিছু দূরে। দুঃস্থদের পাশে দাঁড়াতে। ৮২টি পরিবারের হাতে খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। ভবঘুরে থেকে যৌনকর্মী, যাঁর যেমন প্রয়োজন, সাহায্য করা হচ্ছে। বারুইপুরের শাসন এলাকার অন্তত ১০০ যৌনকর্মীকে কয়েক দিনের খাদ্যসামগ্রী ও স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়া হয়েছে। করোনার আবহে ওই পাড়ায় আর কেউ ঘেঁষছেন না। মেয়েরা ঘরে যেতে চাইলেও পারছেন না। গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রধান শিক্ষক-প্রধান শিক্ষিকারা তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
দেশজোড়া লকডাউন পর্বে এমন উদ্যোগ বেশি ঝুঁকি হয়ে যাচ্ছে না কি? বড়িশা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কাবেরী ঘোষাল বলেন, ‘‘এই সময়ে এগিয়ে তো আসতেই হবে। এই গ্রুপের মাধ্যমে তা সহজে করা যাচ্ছে।’’ সরকারি পদ্ধতি মেনে, দূরত্ব বজায় রেখেই সব কাজ করা হচ্ছে বলে জানালেন কল্যাণবাবু। তিনি জানান, তাঁরা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মে এক হয়ে নিজেদের তাগিদে এই ত্রাণকাজ করতে নেমেছেন।