জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ফাইল চিত্র।
দলীয় নির্দেশ মেনে বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দেবেন তিনি। জানিয়ে দিলেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তৃণমূল পরিষদীয় দলের পক্ষ থেকে হুইপ জারি করে অধিবেশনে নির্বাচিত বিধায়কদের এই অধিবেশনে যোগদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মোদী সরকারের আনা কৃষি আইনের বিরোধী প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিতেই বিধায়কদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বুধবার অধিবেশনের প্রথম দিনেই বাধ্য ছাত্রের মতো যোগও দিয়েছিলেন জিতেন্দ্র। এদিন মুলতুবি প্রস্তাবের পর আগামিকাল পর্যন্ত স্থগিত হয়ে যায় অধিবেশন। বিধানসভা ছাড়ার সময় পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক বলেন, ‘‘আজ কলকাতায় থেকে আগামিকাল পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন যোগ দিয়েই আসানসোল ফিরব। স্বেচ্ছায় জেলা সভাপতির পদ ছেড়েছিলাম। এখনও দলের সদস্য, তাই সে ভাবেই কাজ করে যাব।’’ বুধবার বিধানসভায় এলেও, তৃণমূল পরিষদীয় দলের ঘরে যাননি তিনি। বরং কিছুটা নিঃসঙ্গ ভাবেই বিধানসভা ছেড়েছেন।
গত ডিসেম্বর মাসে আচমকাই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে চিঠি লিখে তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পে আসানসোলকে স্মার্ট সিটি গড়তে বাধা দিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এরপর ‘দলবিরোধী’ মন্তব্যও করেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে পদত্যাগ করেন আসানসোল তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ থেকে।
কিন্তু তাঁর যোগদানে প্রধান অন্তরায় হন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সেই আপত্তির জেরে আর বিজেপিতে যোগদান সম্ভব হয়নি। তারপরেই বিদ্রোহে ইতি টেনে কলকাতায় নিউআলিপুরের সুরুচি সংঘে এসে অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে বৈঠক করে যান তিনি। বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়ে বিদ্রোহ করেছিলেন জিতেন্দ্র, সেকথা স্মরণে রেখেই তাঁকে তৃণমূল নেতৃত্ব সরিয়ে দেন পুর প্রশাসকের পদ থেকে। সূত্রের খবর, বহু চেষ্টা করেও বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ব্যর্থ হন জিতেন্দ্র। এ বার তাঁকে এড়িয়ে যাচ্ছেন দলীয় নেতৃত্ব। এমনকি, গত বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে গিয়ে মমতার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও সফল হননি জিতেন্দ্র। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও কোনও নেতার সঙ্গে কথা বলতে না পেরে খালি হতেই বাড়ি ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। এদিন তাই বাধ্য ছাত্রের মতো বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দিয়ে দলকে ফের বার্তা দিতে চাইছেন জিতেন্দ্র, এমনটাই মত তৃণমূলের একাংশের।