সারদা কাণ্ডে গড়া শ্যামল সেন কমিশনে রাজ্য সরকার কত টাকা দিয়েছিল এবং তার কতটা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে, তা হলফনামা দিয়ে জানাতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট। একটি জনস্বার্থ মামলায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে, চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে ওই হলফনামা পেশ করতে হবে।
আবেদনকারীর আইনজীবী সুদীপ্ত মৈত্র এ দিন আদালতে জানান, সারদা কেলেঙ্কারিতে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরত দিতে সরকার ওই কমিশনের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। ওই কমিশন কিছু লগ্নিকারীকে টাকা ফেরত দিয়েছে। কিন্তু এখনও তাদের কাছে কয়েক কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। সেই টাকা সারদা ও অন্য সংস্থার লগ্নিকারীদের মধ্যে বিলি করা দরকার।
ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্তকে নির্দেশ দেয়, কত টাকা ওই কমিশনে দেওয়া হয়েছিল এবং কত টাকা বিলি হয়েছে, তার হিসেব দিতে হবে হলফনামায়। সেই হলফনামা পেলে মামলার আবেদনকারীকে এক সপ্তাহের মধ্যে পাল্টা হলফনামা পেশ করে তাঁর বক্তব্য জানাতে হবে।
নবান্ন সূত্রের খবর, ক্ষতিপূরণের জন্য রাজ্য ৫০০ কোটি টাকার তহবিল গড়ার ঘোষণা করলেও পুরো টাকা কমিশনে দেয়নি। তহবিলে দেওয়া হয়েছিল ২৮৬ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিলি হয়েছে ২৫১ কোটি ২২ লক্ষ। তার মধ্যে ১০৩ কোটি টাকার চেক ফেরত এসেছে।
জনস্বার্থ মামলার আবেদনে আরও বলা হয়েছে, কমিশনের রিপোর্ট সরকারকে প্রকাশ করতে হবে। কমিশন যে-সব প্রস্তাব দিয়েছে, প্রকাশ করতে হবে তা-ও। সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তের পরে স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট যে-রিপোর্ট কমিশনে পেশ করেছিল, প্রকাশ করতে হবে সেটিও।
হলফনামা পেশের ব্যাপারে আদালত এ দিন যে-নির্দেশ দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, শ্যামল সেন কমিশনের নামে সরকার প্রতারণা করেছে। ‘‘সেই প্রতারণা ফাঁস হওয়া দরকার। কমিশনকে রাজ্য সরকার ৫০০ কোটি টাকা দিয়েছিল। তার মধ্যে ১০৩ কোটি টাকার চেক ফেরত এসেছে। কারণ, উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কী হয়েছে এবং সিট কী করেছে— রাজ্যবাসীর স্বার্থেই সব জানা দরকার,’’ বলেছেন সুজনবাবু।