ফাইল ছবি
পশু-পাখিদের শান্তি ভঙ্গ করে গন্ডগোল কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। আলিপুর চিড়িয়াখানায় গন্ডগোলের ঘটনার নিন্দা করে এমনটাই জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার মন্তব্য, ‘‘পশুদের কিছু হলে কাউকে ছাড়া হবে না। আমি নিজেও পশুপ্রেমী। তা বলে আমি ৩০০ লোক নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঢুকতে পারি না।’’ পাশাপাশি এই ঘটনায় বিচারপতি মান্থার নির্দেশ, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে ওই ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ জমা দিতে হবে আদালতে। বন্ধ চিড়িয়াখানায় কারা ঢুকছিল তা শনাক্ত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এবং বাইরে কত বহিরাগত ছিল সেই রিপোর্ট পুলিশকে দিতে হবে।
গত ২৪ জানুয়ারি আলিপুর চিড়িয়াখানায় ইউনিয়ন দখল নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। অভিযোগ ওঠে, ৪০০ থেকে ৫০০ লোক চিড়িয়াখানার মূল দরজার তালা ভেঙে, পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকে পড়েন। ইউনিয়নের ঘর দখল এবং আলমারি ভেঙে নথি ছিনতাইয়ের অভিযোগ করা হয়। কর্মী নন, এমন অনেক বহিরাগতই ওই বিক্ষোভে শামিল ছিল। কিন্তু এত সব কিছুর পরেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ। এ নিয়েই হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন বিজেপি-র কর্মী ইউনিয়নের নেতা রাকেশ সিংহ।
সোমবার উচ্চ আদালতে ওই মামলার শুনানিতে তাঁর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, ‘‘করোনার কারণে চিড়িয়াখানা বন্ধ রয়েছে। তার পরও সেখানে বহিরাগত ঢুকিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হয়েছে। ভাঙচুর হয়েছে।’’ এই ঘটনা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি মান্থা। তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, ২৪ জানুয়ারি ঘটনাটি ঘটলেও, ২৩ জানুয়ারি থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনও সম্পাদনা ছাড়াই সিসিটিভি ক্যামেরার সমস্ত ফুটেজ জমা দিতে হবে। চিড়িয়াখানার কর্মী ছাড়া বাকি বহিরাগতদের চিহ্নিতও করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। চিড়িয়াখানার বাইরে কী ঘটনা ঘটেছিল সেই রিপোর্ট জমা দেবে পুলিশ।
মামলাকারীর আইনজীবী সূর্যনীল দাস বলেন, ‘‘ঘটনার দিন চারশো থেকে পাঁচশো লোক চিড়িয়াখানার তালা ভেঙে, পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। চিড়িয়াখানায় মধ্যে এই ভাবে ঢুকে পড়া কী করে সম্ভব হল সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি।’’ আগামী বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।