Jalpaiguri Storm

‘এমন সর্বনাশা ঝড় জীবনে আর দেখিনি’

জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির বার্নিশ গ্রামে আমার বাড়ি। চোখের সামনে দেখলাম, ধুলোয় ধুলোয় এলাকা ঢেকে গেল, চোখের সামনেটা অন্ধকার হয়ে এল।

Advertisement

হরিপদ রায় (ঝড়ে জখম)

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৩২
Share:

হরিপদ রায়।

প্রথমে হালকা হাওয়া হচ্ছিল। মাঠের গরু-ছাগল সব বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম। সেই সময় প্রচণ্ড হাওয়া সঙ্গে ধুলো উড়ছিল আশপাশে। এ রকম হাওয়া আমার ৫৮ বছর বয়সে কোনও দিন দেখিনি। শুধু কি হাওয়া! সঙ্গে বিকট শব্দ হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, পাহাড় ভেঙে যেন আমাদের দিকে তেড়ে আসছে। বৃষ্টি হচ্ছিল না, শুধু প্রচণ্ড হাওয়া বইছিল। মানে, যেন উড়িয়ে নিয়ে যাবে! বেশ ভয় হচ্ছিল তখন। ঘরে আমার দশ বছরের মেয়ে কল্পনা ছিল। টিনের চালের কাঠামো ভেঙে পড়ে মেয়েও জখম হয়।

Advertisement

জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির বার্নিশ গ্রামে আমার বাড়ি। চোখের সামনে দেখলাম, ধুলোয় ধুলোয় এলাকা ঢেকে গেল, চোখের সামনেটা অন্ধকার হয়ে এল। মূহূর্তের মধ্যে ঘরের বাড়ির আশপাশের বড় বড় গাছ, সুপারি গাছ ভাঙতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ি ও আশপাশের সব গাছ ভেঙে যাচ্ছে, দেখতে পাচ্ছি। নিজের ঘরে আশ্রয় নিয়েও পার পেলাম না। ঘরের টিনের চালের উপরে ভেঙে পড়ল পাশের একটা বড় গাছের ডাল। এর পরে ঘরের সব টিন উড়ে গেল। সে কী শব্দ! আমার মাথায় ও ঘাড়ে ঘরের একাংশ ভেঙে পড়ল। একেবারে রক্তারক্তি অবস্থা। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছি বলতে পারেন। প্রায় কুড়ি মিনিটের মধ্যে ঘর-বাড়ি সব ভেঙে গেল চোখের সামনে।

পড়শিদের চিৎকার কানে আসছিল। জমিতে ধান সব মাটিতে শুয়ে পড়েছে। বেগুন খেত আর নেই, বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল চাষের জমিতে। ঝড়ের মধ্যেই গ্রামে ছোটাছুটি শুরু হয়ে যায়। ময়নাগুড়ি হাসপাতালে জখমদের ভিড় উপচে পড়েছে। ওখানেই প্রথমে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরে নিয়ে আসা হয় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। এখন সুস্থ আছি। হাসপাতালে এসে জানতে পারলাম চার জন মারা গিয়েছে। আমার মেয়ে ময়নাগুড়ি হাসপাতালে রয়েছে। দুশ্চিন্তা হচ্ছে। তবে একটাই প্রার্থনা, এমন ঝড় যেন কোনও শত্রুর বাড়িতেও না হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement