হাঁসখালিতে বিজেপির কারণ অনুসন্ধান কমিটির বাকি সদস্যদের সঙ্গে রেখা বার্মা (ডানদিক থেকে দ্বিতীয়)। ফাইল চিত্র।
হাঁসখালি-কাণ্ডের কারণ খুঁজতে এসে নাবালিকা ধর্ষিতার নাম সবার সামনে বলে দিয়েছিলেন বিজেপির এক সাংসদ। এই ঘটনায় ওই বিজেপি নেত্রী তথা সাংসদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। একই সঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে হাঁসখালি-কাণ্ডে তদন্তে প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ জানানো হয়েছে আদালতে। সোমবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের হয়েছে মামলাটি।
হাঁসখালির ঘটনায় নদিয়ায় এসেছিল বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বা কারণ অনুসন্ধান দল। সেই দলে ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি রেখা বর্মা। রেখা উত্তরপ্রদেশের লোকসভা সাংসদও। গত ১৫ এপ্রিল তিনি হাঁসখালির মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকাশ্যেই মেয়েটির নাম বলে দেন। তা নিয়েই দায়ের হয়েছে মামলা।
ভারতীয় আইন অনুযায়ী, ধর্ষিতা বা নির্যাতিতার নাম কখনওই প্রকাশ্যে বলা হয় না। তার উপর মেয়েটি নাবালিকা। ঘটনাটি নিয়ে সেই সময়েই প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রধান এবং নারী অধিকার রক্ষা কর্মীরা। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও ঘটনাটির নিন্দা করেন। এমনকি খোদ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও জানিয়েছিলেন, আইনত যে ধর্ষিতার নাম প্রকাশ করা যায় না, সে ব্যাপারে তাঁরা সম্যক অবহিত। রেখা হয়তো ‘ভুল করে মুখ ফস্কে’ নামটি বলে ফেলেছেন। তবে কাজটি যে ভাল হয়নি তা এক বাক্যে মেনেছিলেন সকলেই।
সোমবার অবশ্য এই ঘটনাটি ছাড়াও আরও একটি বিষয়ে মামলা করেছেন আইনজীবী এবং জনস্বার্থ মামলাকারী অনিন্দ্যসুন্দর দাস। তিনি হাইকোর্টকে জানান, শুধু এই ঘটনাতেই নয়, বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ রয়েছে তাঁর। হাঁসখালির জন্য গঠিত ওই দলটিতে রেখা ছাড়াও ছিলেন তামিলনাড়ুর বিজেপি বিধায়ক ভানাথি শ্রীনিবাসন, তামিল অভিনেত্রী খুশবু সুন্দর এবং ইংরেজ বাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। এঁরা হাঁসখালির ঘটনার খোঁজখবর করে একটি রিপোর্ট দেন। জনস্বার্থ মামলাকারী জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই যেখানে ঘটনাটির তদন্ত করছে, সেখানে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের অনুসন্ধান টিম আলাদা রিপোর্ট তৈরি করে দিচ্ছে। এতে তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে।