বিস্ফোরক অডিয়ো ফাঁস। অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
হাঁসখালি-কাণ্ডে ফাঁস বিস্ফোরক তথ্য। সে দিন রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তৃণমূল নেতার ভাগ্নে দীপঙ্কর পোদ্দার ধর্ষণ করে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও এক ব্যক্তি। ফাঁস হওয়া অডিয়ো ক্লিপে এমনই দাবি করেছেন এক ব্যক্তি। যদিও এই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
ফোনের কথোপকথনে মনে করা হচ্ছে, ওই গ্রুপ কলে ছিলেন তিন জন। ফোনের কথোপকথনে অংশগ্রহণকারী সকলেই ব্রজগোপালের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন। তাঁদের একজনকে বলতে শোনা গিয়েছে, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মেয়েটিকে নিয়ে যান দীপঙ্কর। প্রায় এক ঘণ্টা মেয়েটির সঙ্গে ছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে আরও এক জন ছিলেন বলে দাবি। পরে মেয়েটির মা তাকে নিয়ে যায়।
এই গ্রুপ কলে তিন জনের কথোপকথনে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, দীপঙ্কর পোদ্দার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মেয়েটিকে তাঁর সঙ্গে নিয়ে যান। এখন দীপঙ্করের জন্য তাঁরা সবাই আতঙ্কে রয়েছেন। এক জনকে বলতে শোনা যায়, অভিযুক্তদের ছাড়ানোর জন্য জমি বেচে ১০ কোটি টাকা খরচ করবেন ‘দাদু’। তবে কে এই ‘দাদু’, তার পরিচয় কী তা জানা যায়নি। ওই ব্যক্তিকে এও বলতে শোনা যায়, ‘‘ফিরে এসে ১০-১২টা মেশিন নিয়ে ঘুরবে (অভিযুক্ত)।’’
ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘‘দীপঙ্কর সে দিন রাতে গিয়েছিল। এ বার কথাটা শোনো। ও কাউকে বলেনি। এ বার আমাকে বলছে, ‘আমিও ওখানে ছিলাম। ... তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গিয়েছি। কিন্তু কেউ জানে না।’ তার পর ও আর ওর ভিতরে যায়নি। এ বার যখন পুলিশ এসেছে তখন ও ভয় পেয়েছে। ঘেমে গিয়েছে। আর কথা বেরোচ্ছে না। কারণ ওর ভয় রয়েছে। ওই ঘটনায় যুক্ত ছিল। ঘাবড়ে গিয়েছে। ওর জন্যই ব্রজ ফেঁসেছে।’’
উল্লেখ্য, হাঁসখালি মামলায় তৃণমূল নেতা সমরেন্দু গয়ালির ভাগ্নে দীপঙ্কর পোদ্দারকে আটক করেছিল পুলিশ। যদিও পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে তৃণমূল নেতার ছেলে, মূল অভিযুক্ত ব্রজগোপাল ‘ফেঁসে’ গিয়েছে বলে মন্তব্য করেন ওই ব্যক্তি। এর পর এই ফোন-কল কেটে যায়, ‘পাড়ায় মিডিয়া রয়েছে ফোন রাখ’ এই মন্তব্যের পর।
যদিও এই অডিয়ো ক্লিপ ঘিরে আরও কিছু প্রশ্ন উঠছে। তৃণমূল নেতার ছেলেকে বাঁচাতে এই ক্লিপ সংগঠিত ভাবে তৈরি করে প্রকাশ করা হয়নি তো? এরও কোনও উত্তর আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে নেই।
মঙ্গলবার নদিয়ার হাঁসখালি ধর্ষণ মামলার তদন্তভার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-র হাতে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আদালতের নজরদারিতে এই মামলার তদন্ত হবে। তা ছাড়া আদালতকে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট দেবে সিবিআই। আগামী ২ মে-র মধ্যে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে হবে বলে জানায় আদালত।