খাগড়াগড় বিস্ফোরণের একমাত্র জীবিত প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল হাকিমকে বৃহস্পতিবারও হাতে পেল না জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। জমিয়ত-উল মুজাহিদিন জঙ্গি বলে যাকে তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন, সেই হাকিম এখনও পুরোপুরি সুস্থ নন বলে এসএসকেএম হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ জানিয়েছেন। তাঁর পায়ে বোমার স্প্লিন্টার ঢুকে তৈরি হওয়া ক্ষত দু’সপ্তাহ পরেও শুকোয়নি। আজ, শুক্রবার হাকিমের অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা। পায়ের ক্ষত ভরাতে তার স্কিন গ্রাফটিং করা হবে।
বাকি সন্দেভাজনদের এখনও ধরা না-যাওয়ায় খাগড়াগড় বিস্ফোরণ সূত্রে হদিশ পাওয়া জেহাদি চক্রের শিকড় পর্যন্ত পৌঁছতে আপাতত হাকিমই বড় ভরসা গোয়েন্দাদের। রাজ্যের চারটি জেলায় শয়ে শয়ে আইইডি মজুত থাকার কথা ইতিমধ্যেই সে জানিয়েছে। হেফাজতে নিয়ে জেরা করলে হাকিমের কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূণর্র্ তথ্য মিলবে বলে মত তদন্তকারীদের। তা ছাড়া, হাকিমের মতো জঙ্গিকে হাসপাতালে রাখা এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের কাছেও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তদন্তকারীদের মতে, হাকিমের নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি রয়েছে। তবে হাকিমের চিকিৎসা নিয়ে এনআইএ কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না। কারণ হেফাজতে নেওয়ার পরে তাকে জেরার পরিকল্পনা আছে গোয়েন্দাদের।
এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই রোগীকে ছুটি দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে উৎসুক ছিলেন। এ দিন হাকিমকে ছুটি দেওয়ার কথা প্রায় নিশ্চিত ভাবে ধরেই রেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তদন্তকারীদের কথা মেনে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়ার আগে হাকিমের শারীরিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন আরও এক বার পরীক্ষানিরীক্ষা হয়। দেখা যায়, হাকিমের বাঁ পায়ের ক্ষত কিছুতেই শুকোচ্ছে না। চিকিৎসকরা নিয়মিত হাসপাতালে এনে ড্রেসিং করানোর কথা বললেও এনআইএ তাতে রাজি হয়নি। এতে হাকিমের নিরাপত্তা আরও বিঘ্নিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে তদন্তকারীদের অভিমত। এর পরই হাসপাতালের অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। স্থির হয়, শুক্রবারই হাকিমের অস্ত্রোপচার করা হবে। সে ক্ষেত্রে আরও সপ্তাহ খানেক হাকিমকে হাসপাতালেই রাখতে হবে বলে চিকিৎসকেরা মনে করছেন।
দিল্লি আগে জেনেছে, মন্ত্রীর দাবি ঢাকায়
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মোজ্জামেল হকের দাবি, জঙ্গিরা যে বাংলাদেশ থেকে এসে বর্ধমান-সহ রাজ্যের অন্যত্র ঘাঁটি গেড়েছে, দিল্লিকে তা আগেই জানিয়েছিল ঢাকা। খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণের পরে পশ্চিমবঙ্গে জেএমবি জঙ্গিদের জাল ছড়ানোর বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’ আয়োজিত এক সভায় মোজ্জামেল হক এ কথা জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন, “সেখান থেকেও জঙ্গিদের উৎখাত করবে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী।” মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশেও বেশ কিছ উটকো ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আদতে জঙ্গিদের ঘাঁটি। সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া বা জাতীয় পতাকা তোলা হয় না। হক জানান, “এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলেছে সরকার।”