গ্রাফিক: সন্দীপন রুইদাস।
জিএসটি পরিষদের কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। পরিষদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যে যুক্তরাষ্ট্রীয় সহযোগিতার মনোভাব থাকা উচিত, তা ক্রমশ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলেই মনে করেন তিনি। এই মর্মে বুধবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে একটি চিঠি লিখেছেন অমিত। তাঁর মতে, সর্বসম্মতির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে পরিষদের কর্মপদ্ধতি বদলের প্রয়োজন রয়েছে।
বুধবার নির্মলাকে লেখা চিঠিতে অমিতের অভিযোগ, ‘আমাকে যা সবচেয়ে ব্যথিত করে তা হল, কেন্দ্র-রাজ্যের পারস্পরিক বিশ্বাসের অভাবে জিএসটি পরিষদের বৈঠকগুলি ক্রমশ উদ্বেগজনক ও প্রায় বিষাক্ত হয়ে উঠেছে।’ অমিতের দাবি, ‘অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গেই এই চিঠি লিখছি। আমার মতো অনেকেই লক্ষ্য করেছেন, জিএসটি পরিষদের বৈঠকগুলিতে যে যুক্তরাষ্ট্রীয় সহযোগিতার মনোভাব থাকা প্রয়োজন এবং সর্বসম্মতিতে কাজ করার দায়বদ্ধতা থাকা উচিত, তা ধীরে ধীরে উধাও হয়ে যাচ্ছে।’
করোনা পরিস্থিতির আবহে নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে মঙ্গলবার কেন্দ্র-রাজ্যের সমন্বয়ের গুরুত্বের উল্লেখ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘটনাচক্রে, তার ঠিক এক দিন পরেই বুধবার নির্মলার উদ্দেশে এই কড়া ভাষার চিঠি লিখলেন অমিত। নিজের চিঠিতে পরিষদের আত্মানুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অমিত। তিনি লিখেছেন, ‘মাননীয় মন্ত্রীকে আমার সনির্বন্ধ ও খোলাখুলি আবেদন, দয়া করে আত্মানুসন্ধান করুন। যাতে জিএসটি পরিষদের কর্মপদ্ধতি শোধরানো যায়।’
জিএসটি পরিষদের কর্মপদ্ধতি নিয়ে এর আগেও সরব হয়েছিলেন অমিত মিত্র তথা রাজ্য সরকার। ১২ জুন পরিষদের ৪৪তম বৈঠকে রাজ্যের দাবি ছিল, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় টিকা, ওষুধ এবং যাবতীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের উপর থেকে জিএসটি-র হার শূন্য করে দেওয়া হোক। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যাতে অধ্যাদেশ জারি করে, সে আবেদন জানিয়ে ওই বৈঠকের শেষে গত সপ্তাহে নির্মলাকে চিঠি লিখেছিলেন অমিত। তবে রাজ্য সরকারের সে প্রস্তাবে রাজি নয় কেন্দ্র। এমনকি, ৪৪তম বৈঠকে অমিতের কথা শোনা হয়নি বলেও দাবি ছিল তাঁর। এ নিয়ে বিরোধীদের কণ্ঠরোধের মতো অভিযোগও করেছে রাজ্য সরকার। যা নিয়ে উল্টে অমিতের বিরুদ্ধেই তোপ দেগেছিলেন নির্মলা।
পরিষদের বৈঠকে আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগও তুলেছেন অমিত। তিনি লিখেছেন, ‘মাননীয়া মন্ত্রী, সত্যি কথা বলতে কি, সাম্প্রতিক কালে এমন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যেখানে সমস্ত রাজ্যের বক্তব্য ধৈর্য নিয়ে শোনা হলেও পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যা শীর্ষ আমলাদের সাহায্যে জিএসটি পরিষদের বৈঠকে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।’