প্রতীকী ছবি।
পাহাড়ি এলাকায় ধস থেকে প্রাণহানি বাঁচাতে বিশেষ সতর্কবার্তা চালু করেছিল জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা ভূতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। মোবাইলের অ্যাপের মাধ্যমে সেই বার্তা পৌঁছে যেত ব্যবহারকারীর কাছে। সূত্রের খবর, সেই সতর্কবার্তাকে আরও কী ভাবে উন্নত ও নিখুঁত করা যায় সেই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় এই সংস্থা।
সূত্রের খবর, ভূবিজ্ঞান এবং বিপর্যয় সংক্রান্ত ক্ষেত্রে সুসংহত ভাবে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গেও যুক্ত হতে চায় ভূতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধসপ্রবণ এলাকারও বিস্তারিত সমীক্ষা চলছে বলে খবর। জুন মাসেই অসমের বরাক উপত্যাকায় একটি দল গিয়েছিল। মহারাষ্ট্রেও ধসপ্রবণ এলাকার উপরে একটি সমীক্ষা রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সহকর্মীদের উদ্দেশে ভূতত্ত্ব সর্বেক্ষণের ডিজি রঞ্জিৎ রথ যে বার্তা দিয়েছেন তাতেও ভূতাত্ত্বিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে সংস্থার ভূমিকা বৃদ্ধির ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। সেখানে তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে ইতিমধ্যেই সংস্থা ভূমিধস সংক্রান্ত পূর্বাভাস চালু করেছে এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা প্রকল্পে ভূতত্ত্ব সর্বেক্ষণ আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চায়। বিপর্যয় মোকাবিলায় সংস্থার আগামী নানান উদ্যোগের কথাও ডিজি জানিয়েছেন বলে খবর।
পরিবেশবিজ্ঞানী ও ভূতত্ত্ববিদেরা বলছেন, ভূতত্ত্বগত ভাবে এ দেশে সব থেকে ধসপ্রবণ হিমালয় পার্বত্য এলাকা। তার উপরে যে ভাবে অল্প সময়ের মধ্যে অতি-পরিমাণে বৃষ্টির দাপট বাড়ছে তাতে ধসের আশঙ্কা আরও বাড়ছে। ধসের ফলে শুধু প্রাণহানি বা সম্পত্তিহানি হয় এমনই নয়, পাহাড়ি এলাকায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তার ফলে উদ্ধারকাজেও দেরি হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেরলের মুন্নারে অতিবৃষ্টিতে ধসের জেরে প্রাণহানি হয়েছে। গত জুলাই মাসে উত্তরবঙ্গে টানা প্রবল বৃষ্টির সময় একাধিক বার ধসের সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল। ভূবিজ্ঞানীদের মতে, আগে ভাগে যদি ধসের সতর্কতা দেওয়া যায় তা হলে প্রাণহানি আটকানো সম্ভব। ‘‘সাধারণত ২০ ডিগ্রির বেশি ঢাল হলেই ধসের আশঙ্কা বাড়ে। তার উপরে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভূতাত্ত্বিক গঠনের সমীক্ষাও প্রয়োজন। এই সব কিছু মিলিয়েই সতর্কতার মডেল তৈরি করা হয় তার ভিত্তিতে পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব,’’ মন্তব্য এক ভূতত্ত্ববিদের।