প্রতীকী ছবি।
অতিমারির প্রাদুর্ভাবে লোকাল ট্রেন এখনও বন্ধ। শুধু রেলকর্মীদের জন্য কিছু স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চালানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে সোনারপুর স্টেশনে এমনই একটি বিশেষ ট্রেনে বেআইনি ভাবে ওঠা যাত্রীদের নামাতে গিয়ে আক্রান্ত হন জিআরপি এবং আরপিএফের পুলিশকর্মীরা। প্রথম দিকে রক্ষীরা সংখ্যায় কম থাকায় ক্ষিপ্ত যাত্রীদের হামলার মুখে পিছু হটতে থাকেন। অবৈধ যাত্রীদের ছোড়া ইটপাথরে জখম হন কয়েক জন পুলিশকর্মী। পরে বাড়তি বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। গোলমালের জেরে সোনারপুর থেকে বিভিন্ন শাখার স্টাফ স্পেশাল ট্রেনগুলি দেরিতে চলে বলে পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিশেষ ট্রেনে সাধারণ যাত্রীদের ওঠার কথা নয়। কিন্তু শহরতলির ট্রেন না-চলায় রুটিরুজির টানে রক্ষীদের ফাঁকি দিয়ে শহরতলির এক শ্রেণির যাত্রী নিত্যদিন ওই সব ট্রেনে উঠে কলকাতায় কাজকর্ম করতে আসেন। এ দিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ সোনারপুর স্টেশনে বারুইপুর থেকে শিয়ালদহমুখী ট্রেনে সেই সব যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে জিআরপি ও আরপিএফ। ক্ষিপ্ত যাত্রী-জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি পাথর ছুড়তে থাকে। পুলিশের দিকে পাথর বৃষ্টির পাশাপাশি ট্রেনের ভিতরে ভাঙচুর চালানো হয়। চালকের কেবিনে হামলা চালানোর অভিযোগও উঠেছে অবৈধ সওয়ারিদের বিরুদ্ধে। চালকের কেবিনের জানলার কাচ ভাঙার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ।
বারুইপুর পুলিশ-জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসুর নেতৃত্বে সোনারপুর ও বারইপুর থানার যৌথ বাহিনী প্রথমে লাঠি চালিয়ে মারমুখী যাত্রীদের হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। বারুইপুর পুলিশ-জেলার সদর থেকে আরও বাহিনী আসার পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনার মধ্যে এখন রোজ সকালে ক্যানিং, লক্ষ্মীকান্তপুর, ডায়মন্ড হারবার ও বারুইপুর স্টেশন থেকে শিয়ালদহমুখী স্পেশাল ট্রেন চালানো হয়। মাস দুয়েক ধরে ওই ট্রেনগুলিতে অবৈধ যাত্রীরা উঠছিলেন। প্রায় প্রতিদিনই অভিযান চালিয়ে তাঁদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। এ দিন বারুইপুর থেকে প্রায় বাদুড়ঝোলা অবস্থায় ওই ট্রেনটি সোনারপুরে পৌঁছয়। জিআরপি ও আরপিএফ অবৈধ যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ক্ষিপ্ত জনতা রেললাইনের পাথর তুলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ছুড়তে থাকে। ক্ষুব্ধ যাত্রীদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে লোকাল ট্রেন বন্ধ। বিকল্প ব্যবস্থা না-থাকায় বাধ্য হয়েই তাঁদের বিশেষ ট্রেনে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
রেল পুলিশ অফিসারেরা জানান, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য লোকাল ট্রেন বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন স্টেশন থেকে এক শ্রেণির সাধারণ যাত্রী রেলকর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট বিশেষ ট্রেনে উঠে ঠাসাঠাসি করে যাচ্ছেন। তাতে করোনা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যই ব্যাহত হচ্ছে। অভিযান চালানো হচ্ছে সেই সব যাত্রীকে নিরস্ত করার জন্যই।