প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূলে ফিরে আসার ‘উদ্যোগ’ যেমন বাড়ছে তেমনই ভোটের আগে বিজেপিতে চলে যাওয়াদের না ফেরানোর দাবিও জোরালো হচ্ছে দলের মধ্যে। এই অবস্থায় তৃণমূল নেতৃত্ব ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছেন। দলের এক শীর্ষনেতা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘দল কাদের ফিরিয়ে নিতে পারে সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে স্থির করবেন। তবে তাড়াহুড়োর কিছু নেই।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘যাঁরা ভোটের সময় দল বদলে লটারি মিলবে ভেবেছিলেন এবং সেই সময় দলের বিরুদ্ধে কুৎসা করেছেন তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি খুব সহজ হবে না।’’ কিছু কিছু লোককে না ফেরানোর মনোভাব তৃণমূলনেত্রীর আছে।
ফিরে আসার উদ্যোগে মঙ্গলবার একটি মাত্রা যোগ করেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল। ভোটের আগে এই সাংসদের বাড়িতে তাঁর মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের সন্ধ্যায় সরাসরি চলে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তার পরে তৃণমূল সাংসদ সুনীলবাবুও আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছা এ দিন তিনি নাকচ করেননি। বলেছেন, ‘‘যাঁরা যাঁরা গিয়েছিলেন, সকলের সঙ্গেই আমাদের কথাবার্তা চলছে। আজ মিটিংও হয়েছে। কাল ( বুধবার) পর্যন্ত চলবে।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘দলকে বড় করার জন্য অনেককেই নিয়েছিলাম। তাঁদের যোগ্য সম্মান, পদ দেওয়া হয়েছে। অনেককে জিততে পেরেছেন, কেউ কেউ পারেননি। যাঁরা হতাশ বোধ করছেন তাঁরা চাইলে কথা বলতে পারেন।’’
সুনীলবাবুর আরও বক্তব্য, তৃণমূল থেকে যাঁরা গিয়েছেন বিজেপি তাঁদের বা ‘সহ্য’ করতে পারছে না। তাঁর সঙ্গে শুভেন্দুর যে সব কথা হয়েছিল তার কিছুই রাখা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর ক্ষোভ, শুভেন্দু এখন আর তাঁর ফোন ধরেন না।
এদিকে বিজেপিতে গিয়ে ‘মানিয়ে নিতে না-পারা’ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলে ফিরিয়ে না নেওয়ার দাবিতে তৃণমূলের বিক্ষোভ ইতিমধ্যেই রাস্তায় চলে নেমেছে। পথ অবরোধ, রাজীবনের ছবিতে জুতোর মালা পরানো এবং মিছিল হয়েছে হাওড়ায়। একই ভাবে রাজীবের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত উত্তরপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের বিরুদ্ধেও মঙ্গলবার তাঁর এলাকায় পোস্টার পড়েছে। তিনি রাজীবের সঙ্গেই বিশেষ বিমানে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন এবং প্রার্থী হয়ে ভোটে হারেন।
হুগলির তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের বক্তব্য, ‘‘এই সমস্ত পোস্টার সংস্কৃতি, দল কখনই অনুমোদন করে না। কেউ দলে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করলে আমরা সেই বার্তা দলকে পৌঁছে দিতে পারি মাত্র। এর বেশি দায়িত্ব, দল আমাদের দেয়নি।’’
এ দিনই সল্টলেকে সব্যসাচীর দত্তের বিরুদ্ধেও ‘তৃণমূল কর্মী’দের নামে দেওয়া হোর্ডিং দেখা গিয়েছে। যাতে দাবি, তাঁকে যেন ফেরানো না হয়। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য সব্যসাচীকে নিয়ে এই হোর্ডিংয়ের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। সূত্রের খবর, সেখানকার তৃণমূল নেতাদের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য সব্যসাচী বিজেপিতে গিয়েছিলেন লোকসভা ভোটের পরে। তৃণমূল ভবন মনে করে, তিনি দল বদলালেও কুৎসা করেননি।