ফাইল চিত্র।
দু’পক্ষেরই অবস্থান কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে। কিন্তু বিধানসভায় সেই আইনের বিরোধিতায় প্রস্তাব নেওয়ার ক্ষেত্রে সহমত অধরাই থাকল শাসক তৃণমূল এবং বিরোধী বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে। কেন্দ্রীয় আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে শাসক পক্ষ বিধানসভায় সরকারি প্রস্তাব আনতে চাইছে। একই বক্তব্যের সঙ্গে রাজ্যেরও সংশ্লিষ্ট দু’টি আইন বাতিলের দাবি তুলে বেসরকারি প্রস্তাব জমা দিয়েছে বাম ও কংগ্রেস। তৃণমূলের অভিযোগ, বিরোধীরা অহেতুক রাজনীতি করছে। আবার বাম ও কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, রাজ্যের আইন প্রত্যাহার করে নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে চাপে ফেলতে চাইছে না তৃণমূল।
বিধানসভার সংক্ষিপ্ত অধিবেশন বসছে কাল, বুধবার থেকে। তার আগে সোমবার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে সর্বদল এবং কার্য উপদেষ্টা (বি এ) কমিটির বৈঠক ছিল। অধিবেশনের মেয়াদ আরও বাড়িয়ে জরুরি বিভিন্ন বিষয় আলোচনার দাবি তুলেছিল বিরোধীরা। সরকার পক্ষ অবশ্য সেই দাবি মানেনি। সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট অন অ্যাকাউন্ট পাশ করানোর জন্য ফের অধিবেশন ডাকা হতে পারে। বি এ কমিটিতে ঠিক হয়েছে, শোকপ্রস্তাব নিয়ে বুধবার অধিবেশন মুলতবি হয়ে যাবে। পর দিন, বৃহস্পতিবার প্রথমার্ধে দু’টি সংশোধনী বিল আসবে। দ্বিতীয়ার্ধে আলোচনা হবে কৃষি প্রস্তাবের উপরে।
কেন্দ্রের কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বিধানসভার কার্যবিধির ১৬৯ ধারায় সরকারি প্রস্তাব আনতে চাইছে শাসক পক্ষ। আর কেন্দ্রীয় আইনের পাশাপাশি ২০১৪ ও ২০১৭ সালে রাজ্যে পাশ হওয়া কৃষিপণ্য সংক্রান্ত দু’টি আইনও বাতিল করার দাবি জানিয়ে ১৮৫ ধারায় বেসরকারি প্রস্তাব জমা দিয়েছে বাম ও কংগ্রেস। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার যে আইন পাশ করেছে, সেই আইন বাতিল করার কথা সরকারি প্রস্তাবে থাকবে— এটা কী ভাবে বলছেন ওঁরা, জানি না! তা ছাড়া, ওই আইনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় আইনের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ পার্থবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘আমরা দেখেছি, রাজ্যের ওই অংশটুকু ছাড়া আমরা ও বিরোধীরা প্রায় একই কথা বলছি। তাই আলাদা করে ১৮৫ ধারায় প্রস্তাব দেওয়ার কোনও কারণ নেই।’’
এই প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, ‘‘মোদী সরকার তো একই যুক্তিতে বলবে, যে বিল কেন্দ্র পাশ করেছে, সেটা তারাই আবার প্রত্যাহারের কথা বলবে কী করে! বরং, রাজ্যের আইন প্রত্যাহারের কথা বলা হলে একটা নজির তৈরি হত। মোদী সরকার চাপে পড়ত, রাজ্য পারলে কেন্দ্র কেন পারবে না? বিজেপি সরকারকে সেই অস্বস্তিতে ফেলতে চাইছে না তৃণমূল!’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘অনেক জরুরি বিষয়ে আলোচনার দরকার ছিল। কিন্তু সরকার ভয় পাচ্ছে, তাই আলোচনা চায় না! দু’দিনের কথা বলে প্রকৃত পক্ষে এক দিনের অধিবেশন হচ্ছে।’’